তীব্র শীতে ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে নীলফামারী, বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন

নীলফামারীতে ঘন কুয়াশার সঙ্গে ঠান্ডা বাতাসে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে জেলার সীমান্তঘেঁষা ডিমলা উপজেলার তিস্তা-তীরবর্তী চর অঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষজন বিপাকে পড়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৫ শতাংশ ও দৃষ্টিসীমা ২০০ মিটারের মধ্যে রয়েছে। এতে করে বিমান ওঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।

আবহাওয়ার এই বাড়া-কমায় এ অঞ্চলের মানুষের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। দিনেদুপুরেও দূরপাল্লার যানবাহন ও মোটরসাইকেলের চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছেন। তিনি বলেন, ‘এরকম আবহাওয়া আরও দুই থেকে তিন দিন থাকতে পারে।’

ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে বিপাকে পড়েছেন এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষরা। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে নিবারণের চেষ্টা করছেন। ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে গবাদি প্রাণীকে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।

খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা

সকালে জেলা শহরের বড় বাজার ট্রাফিক মোড়ে রিকশাচালক মতিয়ার রহমান (৫৩) বলেন, ‘বেলা ১১টা বাজতে চললো, এ পর্যন্ত কোনও ভাড়া পাইনি। বাতাস ও ঠান্ডায় শহরে লোকজন চলাফেরা খুবই কম করছে। ছেলেমেয়েদের মুখে দু-মুঠো ভাত তুলে দিতে বাধ্য হয়ে এই ঠান্ডায় রিকশা চালাতে হচ্ছে। তবু ভাড়া মিলছে না। ঠান্ডায় যাত্রীরা ঘর থেকে বের হচ্ছে না বলেই অলস সময় পার করতে হচ্ছে।’

এদিকে, জেলার ডিমলা উপজেলার তিস্তা চরের খগাখড়িবাড়ী গ্রামের মশিয়ার রহমান (৫৫) বলেন, ‘অভাবের সংসার গায়ের কাপড় কিনিবার টাকাপয়সা নাই। এবার শীতে কোনও কম্বল পাই নাই, চেয়ারম্যান মেম্বার দেয় নাই।’

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, ‘ঘন কুয়াশায় বিমানবন্দর রানওয়েতে সকাল ১০টায় দৃষ্টিসীমা ছিল ২০০ মিটার। যা ফ্লাইট উঠানামায় বিঘ্ন ঘটছে।’ তবে দুপুরের মধ্যে কুয়াশা কেটে যাবে বলে মনে করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক নায়িরুজ্জামান জানান, জেলার ছয় উপজেলায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে আরও ১০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দটি পেলে প্রত্যেক উপজেলায় দ্রুত পাঠানো হবে। আশা করি, আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে এ সমস্যা কেটে যাবে।