আমরা কেন নিজেদের মধ্যে লড়াই করবো: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের ভাগ করেছি। এই ভাগ করাটাই হচ্ছে ভয়ানক। অথচ দেখেন যুগের পর যুগ আমরা একসঙ্গে বাস করে আসছি। কেউ বিপদে পড়লে আমরা একে অপরের সাথে মিশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই।’

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ৪নং বড়গাঁও ইউনিয়নের লক্ষীর হাটে হিন্দু সম্প্রদায়দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নিজেদের একটা বিচার বিবেচনা আছে। জনগণের কাছে যাকে ভালো লাগবে সে তাকে ভোট দেবে। কিন্তু ভোট দেওয়ার জায়গাটা তো তারা রাখেনি। গত ১৫ বছর ধরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। এই দেশটা আমাদের। আমরা ভারত, পাকিস্তান, আমেরিকার নয় বরং পরিবারের তাগিদে আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। মরলে এই দেশেই মরতে হবে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখানেই বড় হবে, এখানেই লেখাপড়া শিখবে। এখানে কেন আমরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করবো? নিজেদের মধ্যে যেদিন আমরা লড়াই বন্ধ করতে পারবো সেদিন আমরা সঠিক স্থান খুঁজে পাবো। তা না হলে এই ঝগড়া চলতেই থাকবে। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের কোন উন্নতি ঘটবে না।’

শেষ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি হাসিনা দেশ থেকে পালাবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা বিচার থাকে। তিনি বিচার করেছেন। এত পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনী থাকা সত্ত্বেও কেউ তার পাশে দাঁড়ালো না। তাকে দৌড়ে লুকিয়ে এই দেশ থেকে পালাতে হয়েছে। কেন? কারণ তিনি এমন কাজ করেছেন যে, এই দেশে থাকার মতো কোনও পথ ছিল না। চারদিক থেকে মানুষ আর মানুষ। তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল গণভবন আর ওই শেখ হাসিনা।’

মিথ্যা মামলা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চাই না আর এ ধরনের মিথ্যা মামলা হোক। আমরা ন্যায্য ও সুবিচার চাই। আমরা মাথার ওপর একটা ভালো ছায়া বা আশ্রয় চাই। আমরা কৃষকেরা ভালো সেচ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ফসলের ন্যায্যমূল্য চাই। এই ব্যবস্থাটা আমরা করবো।’

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাচ্ছি যেন একটা অবাধ নির্বাচন হয় যে নির্বাচনে জনগণের ভোটে সরকার গঠন করতে পারি। যে সরকার হবে জনগণের সরকার। আমরা আমাদের সুখ দুঃখের কথা যেন সেই সরকারকে বলতে পারি এবং তারা আমাদের সাহায্য করবে।’

পরিশেষে হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টানসহ সকলের কাছে অনুরোধ রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আসুন আমরা নিজেদের মধ্যে কোনও বিভাজন সৃষ্টি না করি। আমরা সবাই এক হই, একটা লক্ষ্যে যে আমরা দেশটাকে গড়ে তুলে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবো, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো। আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে তিনি মুন্সিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সর্বস্তরের জনতার মাঝে আরেকটি জনসভায় বক্তব্য দেন।