গাইবান্ধায় আ.লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, খুলে নিয়ে গেছে জানালার গ্রিল-রড

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল বের করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে জানালার গ্রিল ও লোহার রড খুলে নিয়ে যেতে দেখা গেছে হামলাকারীদের।

শনিবার (১০ মে) বিকাল ৫টার দিকে উপজেলা পরিষদের গেট সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু মার্কেট ভবনের দোতলার দলীয় কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক হামলা-ভাঙচুরে অংশ নেন। তবে তাদের দলীয় পরিচয় জানা যায়নি। 

অভিযোগ রয়েছে, গাইবান্ধা-৩ আসনের সাবেক এমপি উম্মে কুলসুম স্মৃতি ও তার ভাই পলাশবাড়ীর সাবেক পৌর মেয়র গোলাম সারোয়ার সরকারি বরাদ্দের টাকায় বঙ্গুবন্ধুর নামে মার্কেট নির্মাণ করে নিচতলায় দোকানঘর ভাড়া এবং দোতলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় স্থাপন করেছেন।

মার্কেটের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, শনিবার বিকালে স্কুল ড্রেস পরা পাঁচ-ছয় জন যু্বক দৌড়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আসেন। তারা হাতুড়ি দিয়ে দরজা-জানালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান। এ সময় কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ওপর থেকে নিচে ফেলে দেন। পরে সেগুলোতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর খুলে ফেলা জানালার গ্রিল ও লোহার রড নিয়ে যান কয়েকজন যুবক। তবে ওই যুবকদের পরিচয় এবং তাদের চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল ব্যাগ কাঁধে দুই যুবক জানালার গ্রিল নিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছেন। তাদের পেছনে আরও দুজনকে হাতে লোহার রড নিয়ে কার্যালয় থেকে বের হতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘বিকালে উপজেলার চৌমাথা মোড়ে ছাত্র-জনতার ব্লকেড ও অবস্থান কর্মসূচি চলছিল। পরে হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার খবর পাই। হামলাকারীরা তালা ভেঙে সেখানে থাকা চেয়ার-টেবিল বের করে আগুন দিয়ে চলে যায়। তবে হামলাকারীদের পরিচয় জানাতে পারেননি ওই এলাকার লোকজন।’

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পলাশবাড়ী শহরের চৌমাথা মোড়ে ব্লকেড এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয় । পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌমাথা মোড়ে এসে শেষ হয়। তবে মিছিলে অংশ নেওয়া কেউ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালায়নি বলে জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের জেলার মুখ্য সংগঠক মাসুদ রানা শেখ বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পালিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি শেষ করেছি। আমাদের মিছিলে অংশ নেওয়া কেউ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেনি। ছাত্র-জনতার কেউ এ ঘটনায় জড়িত নয়।’ 

পলাশবাড়ী উপজেলা যুব জামায়াতের সভাপতি শামীম হোসেন বলেন, ‘অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। তবে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় আমাদের কোনও নেতাকর্মী জড়িত নয়।’