রংপুরের তারাগঞ্জে ঘুরতে আসা পর্যটক ইরানি দম্পতিকে মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক চার জনকে মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার দুপুরে ওই দম্পতিকে উদ্ধার ও চার জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় তারাগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসিনুর রহমান বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করে মামলা করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলো- কুর্শা ঘনিরামপুর রামপুরা জোতপাড়া গ্রামের রশিদুল ইসলাম (৪২), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৩৫), মেরাজুল ইসলাম (৩৮) ও রাবেয়া বেগম (৪৫)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে ইরানি পাসপোর্টধারী দম্পতি সেলিম রেজা হোসাইনি (৬১) ও ইয়াসিমিন ইয়াজডানজু (৫৬) বাংলাদেশে ভ্রমণে আসেন। গত রবিবার ঢাকা থেকে প্রাইভেটকার ভাড়া করে রংপুরে আসেন। সেখানে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রি যাপন করেন তারা। সোমবার গুগল ম্যাপ অনুসরণ করে রংপুর শহর থেকে সেলিম রেজা নিজেই প্রাইভেটকারটি চালিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পথ ভুলে তারা উপজেলার ঘনিরামপুর রামপুরা জোতপাড়া এলাকায় রশিদুল ইসলামের বাড়ির কাছে পৌঁছান। রশিদুলের কাছে পানির পিপাসা মেটানোর জন্য আকার ইঙ্গিতে ওই দম্পতি বোঝান এবং সহযোগিতা চান। পানি পান করার পর ইরানি দম্পতি ইংরেজি ও ইরানি ভাষায় কথা বললে রশিদুল, মেরাজুল, রাবেয়া, মনোয়ারা তাদের প্রতারক মনে করে চিৎকার শুরু করেন। তখন লোকজন জড়ো করে ওই ইরানি দম্পতিকে মারধর করে সঙ্গে থাকা ১০০ ডলারের পাঁচটি নোট, একটি হাতঘড়ি, পাসপোর্ট, একটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ছিনিয়ে নেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনীর তারাগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল, তারাগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা ঘটনাস্থলে যান। পরে দম্পতিকে উদ্ধার করেন তারা। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সেনাবাহিনী।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ‘ইরানি নাগরিক দম্পতিকে মারধর ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতার চার জনকে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ছিনতাই হওয়া ডলারের মধ্যে ১০০ ডলারের একটি নোট, পাসপোর্ট ও হাতঘড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মোবাইল ও ১০০ ডলারের চারটি নোট পাওয়া যায়নি। সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’