১০ হাজার টাকার জন্য বন্ধুকে হত্যা

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে পুকুর থেকে সাধন চন্দ্র রায় (২২) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধারের পাঁচ দিনের মধ্যে ঘটনার রহস্য ও মূল আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র ১০ হাজার টাকার জন সাধন চন্দ্র রায়কে হত্যা করে লাশ ও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পুকুরে ফেলে দেয় তারই বন্ধু মনদীপ রায় (২০)। 

শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে সাংবাদিকদের এই বিষয়টি জানান দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সিফাত-ই-রাব্বানী, কাহারোল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান ও বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদ সরকার উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার জানান, এই ঘটনায় মনদীপ রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার মনদীপ রায় একই গ্রামের তপন কুমার রায়ের ছেলে। আর নিহত সাধন চন্দ্র রায় রনটি গ্রামের মিনাল চন্দ্র রায়ের ছেলে। তিনি স্থানীয় বাজারে ওষুধের দোকান করতেন। নিহত সাধন চন্দ্র রায় ও আটক মনদীপ রায় দুই জনই বন্ধু ছিলেন।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, গত ২৩ জুন (সোমবার) উপজেলার ইশানিয়া ইউপির রনটি গ্রামের পুকুর থেকে সাধক চন্দ্র রায়ের লাশ উদ্ধার করে বোচাগঞ্জ থানা পুলিশ। এই ঘটনায় গত বুধবার নিহতের পরিবার বোচাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় নিহতের বন্ধু মনদীপ রায়কে আটক করে পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মনদীপ পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। 

তিনি জানান, আসামি জবানবন্দি দেন, ২৩ জুন রাত আনুমানিক ৯টার দিকে মোবাইলে সাধনকে পুকুর পাড়ে ডেকে এনে ধার দেওয়া টাকা ফেরত চান। কিন্তু এরই মধ্যে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে মনদীপ বাঁশের লাঠি দিয়ে সাধনের মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। অবস্থা বেগতিক দেখে লাশ ও তার মোটরসাইকেলটি পুকুরে ফেলে দেন।

এসপি জানান, এই ঘটনায় শনিবার বেলা ১১টায় আসামিকে সঙ্গে নিয়ে ওই পুকুর পাড়ে উপস্থিত হন। আসামির দেওয়া তথ্যমতে, পুলিশ পুকুরে ডুবে থাকা ডিসকভার-১২৫ মোটরসাইকেল ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ মে অভিযুক্ত মনদীপ ভুক্তভোগী সাধনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেন। কথা ছিল ৩ জুনের মধ্যে তা পরিশোধ করবেন এবং সঙ্গে অতিরিক্ত এক হাজার টাকা দেবেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়েও টাকা ফেরত না দেওয়ায় পরিবারের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর সাধনের মা মনদীপের মাকে বিষয়টি জানালে তিনি ছেলেকে বকাঝকা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মনদীপ ২৩ জুন রাতে সাধনকে ডেকে নিয়ে যান ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বাড়ির পুকুর পাড়ে। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। পরে লাশ ও মোটরসাইকেলটি পুকুরে ফেলে দেন। বুধবার পুকুরটিতে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ও সিআইডির একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।