বাহুবলে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ: এসআই বরখাস্ত, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

হবিগঞ্জের পুলিশ-ছাত্র সংঘর্ষহবিগঞ্জের বাহুবলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শেষে স্কুলের ফেরার সময় শিক্ষকদের আটকের জের ধরে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর এখনও ওই এলাকা থমথমে হয়ে আছে। সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে এসআই দেলোয়ার হোসেনকে ক্লোজ করা হয়েছে।  এছাড়া ঘটনার তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুদীপ্ত রায়কে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে বাহুবল দীননাথ মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীরা  বিদ্যালয় জাতীয়করণ সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার শামছুন্নাহার পারভীনের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অফিস ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচি পালন শেষে স্কুলে ফেরার পথে বাহুবল থানার এসআই দেলোয়ারের সঙ্গে এক ছাত্রের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দেলোয়ার স্কুলের দুই শিক্ষককে থানায় ধরে নিয়ে গেলে উত্তেজিত ছাত্ররা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত ছাত্ররা থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গ্লাস ভাঙচুর করে। এ সময় পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ছাত্রসহ পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হয়।

স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় একজনকে সিলেট ও চার জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এক ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্র পরিণত হয়। বিকেলে থানায় ছুটে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মনিম চৌধুরী বাবু, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই। এ সময় তারা থানা প্রাঙ্গনে বসানো সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেন। আটক শিক্ষকদের ছেড়ে দিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেন বাহুবল থানার ওসি মনিরুজ্জামান।হবিগঞ্জের পুলিশ-ছাত্র সংঘর্ষ

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র সাংবাদিকদের জানান, ‘এ ঘটনায়  প্রাথমিকভাবে থানার এসআই দেলোয়ারের ইন্ধন পাওয়া গেছে। যে কারণে তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সুদীপ্ত রায়কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কীভাবে এই ঘটনা ঘটে, কারা এতে জড়িত তা তদন্তের বের হয়ে আসবে।’ তিনি বলেন, এ ঘটনার অন্য কোনও পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাহুবল উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই জানান, ‘পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বিষয়টি নিয়ে আগামী ২৬ অক্টোবর বসা হবে। সেদিন এর সমাধান করা হবে। এ বিষয়ে আর কোনও ধরনের বাড়াবাড়ি করা হবে না কোনও পক্ষ থেকেই। আর আহত ছাত্রদের উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’ 

বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, ‘পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের সংঘর্ষে বিষয়টি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এর সমাধানের জন্য আমরা সমঝোতায় এসেছি।’

আরও পড়ুন- 

মিলারদের কারসাজিতে মোটা চালের কেজি ৪০ টাকা

নারী জেএমবি: কেউ স্বামীর প্ররোচনায়- কেউবা নিজেই

/এফএস/