আ. লীগের জায়গায় জায়গায় কাউয়া আছে: ওবায়দুল কাদের

সিলেটে ওবায়দুল কাদের (ছবি: ফোকাস বাংলা)আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের ভেতরে এখন কাউয়া (কাক) ঢুকছে। দলের জায়গায় জায়গায় কাউয়া আছে। এটি আর চলবে না। দলে পেশাহীন পেশীজীবীর দরকার নেই। ঘরের ভেতরে ঘর করা চলবে না। জমিদারির মত পদ দখল করে ঘরে বসে থাকা আর চলবে না। প্রতিটি স্থানেই প্রকাশ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি দেওয়া হবে।’

বুধবার (২২ মার্চ) দুপুরে সিলেট নগরের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগীয় তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় নেতাকর্মীদের সব ভেদাভেদ ও মতপার্থক্য ভুলে দলের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আর দেড় বছর বাকি। দলকে জঞ্জালমুক্ত করতে হবে। হাতে সময় খুব কম। এখন আর স্লোগান নয়, এবার অ্যাকশন হবে অ্যাকশন। নেতাকর্মীদের কথা কম বলে বেশি বেশি করে কাজ করতে হবে। আর আওয়ামী লীগকে হাইব্রিড নেতাদের কাছ থেকে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলকেই নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নামে, আওয়ামী লীগের নামে দোকান খোলা যাবে না। আজ  ব্যাঙের ছাতার মতো এসব দোকান গড়ে উঠছে। অওয়ামী প্রচার লীগ, তরুণ লীগ, প্রজন্ম লীগ, প্রবীণ লীগ, কার্মজীবী লীগ, ডিজিটাল লীগ, হাইব্রিড লীগ। এইসব চলবে না। এই সবকে গ্রেফতার করে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের কারও কারও আচরণে মানুষ অসন্তুষ্ট। নেতাদের খুশি করলে চলবে, নাকি জনগণকে খুশি করতে হবে। নেতারা এখানে যারা আছেন তাদের খুশি করে লাভ নেই। কাগজের ছবি বিলবোর্ডের ছবি আপনাকে বাঁচাতে পারবে না। ওই বিলবোর্ডের ছবি থাকবে না। কাগজের ছবি মুছে যাবে, পোস্টারের ছবি ছিঁড়ে যাবে, বাগানের ফুল শুকিয়ে যাবে। তোরণের ফুল ভেঙে যাবে। পাথরের ছবি খয়ে যাবে, হৃদয়ে লিখা নাম রয়ে যাবে। হৃদয়ে নাম লিখতে পারলে আপনি বেঁচে থাকবেন। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ এই সড়ক কোনও দিন হয়নি। আজ নতুন করে স্ট্রং বেইজের ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজীর বাজার আমরা সমাপ্ত করেছি। সিলেটে যেদিকে যান ব্রিজ আর ব্রিজ। সুনামগঞ্জ-জকিগঞ্জ-সিলেটে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। সেতুর চেয়ে এখন এন্টারটেইনমেন্ট হচ্ছে বেশি। তরুণ-তরুণীরা হাওয়া খাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এই বছরই সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে চার লেনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। এই প্রকল্প চায়নার একটি কোম্পানি সম্পন্ন করবে। সিলেটে আজ সবই আছে, নেই প্রবীণ নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ, স্পিকার হুমায়ুন রশীদ, দেওয়ান ফরিদ গাজী, রক্তাক্ত সেই শাহ এস এম কিবরিয়া, এনামুল হক মুস্তফা শহীদ, মহসিন। প্রবীণেরা চলে গেছেন, সর্বশেষ প্রিয় মানুষ বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত চলে গেছেন। শামীম সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেছে। সুফিয়ানও চলে গেছে। একে একে সব চলে গেছে। হারিয়ে যাচ্ছে পুরনো পাতাগুলো। যারা চলে গেছেন নতুনেরা তাদের থেকে প্রেরণা নেবেন।’

সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় যুগ্মসম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফের সভাপতিত্বে বুধবার (২২ মার্চ) অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, অধ্যাপক রফিকুর রহমান।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- অর্থ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ মান্নান, জাতীয় সংসদের হুইপ সাহাব উদ্দিন, সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সংসদ ইমরান আহমদ, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ কয়েস, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, অ্যাডভোকেট শাহানা রব্বানী, সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক নুরুল হুদা মুকুট, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজুর রহমান, হবিগঞ্জে জেলা পরিষদের প্রশাসক ডা. মুশফিক আহমদ, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমানসহ সিলেট বিভাগের সব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কার্যকরী কমিটির সব নেতারা।

/এফএস/ 

আরও পড়ুন- 


মোবাইল ফোনের টাওয়ারের রেডিয়েশন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর