সিলেটে ইফতারে খিচুড়ি-আখনির কদর

সিলেটের ইফতারে জনপ্রিয় খিচুড়ি ( ছবি- সিলেট প্রতিনিধি)

সিলেটে ইফতারের বাজার এখন বেশ চাঙ্গা। সিলেটে রোজাদাররা ঘরের তৈরি ইফতারে রোজা ভাঙলেও এখন ঝোঁক বেড়েছে বাজারে বিক্রি হরেক রকমের ইফতারিতে। কয়েক বছর ধরে সিলেটে বিক্রি হচ্ছে হরেক পদের ইফতারি। তবে এর মধ্যে সিলেটের প্রচলিত নরম খিচুড়ি ও গরুর মাংসের আখনির কদর খুব বেশি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এছাড়াও পছন্দের তালিকায় রয়েছে জিলাপি, ফিন্নি আর বাখরখানি।

সিলেটের ইফতার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চিকেন শাসলিক, চিকেন উইংস, কাটি কাবাব, হাঁড়িয়ালি কাবাব, নার্গিস কাবাব, চিকেন ললিপপ, লেমন চিকেন, চিকেন রুশনি, চিকেন চাপ, বিফ চাপ, গ্রিল চিকেন, পুরান ঢাকার ঘুগনি, বড় বাপের পোলায় খায়, সঙ্গে রয়েছে দেশীয় ইফতার ছোলা ও পিয়াজু। হরেক পদের ইফতারের সঙ্গে সব দোকানেই থাকে নরম খিচুড়ি ও আখনি। স্থান ও দোকান ভেদে এর দামে তেমন কোনও পার্থক্য নেই বললেই চলে। এই দুই পদের ইফতারির সঙ্গে  ক্রেতারা চটকদার ইফতারও কিনছেন। তবে ওগুলোর চাহিদা খুব সামান্য বলেই জানালেন বিক্রেতারা।

সিলেটের জনপ্রিয় খাবার আখনি

সিলেট নগরের বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, শিবগঞ্জ ও উপশহর এলাকার কিছু রেস্টুরেন্টে বিক্রি হয়ে থাকে বাহারি ইফতার। তবে ক্রেতাদের ভিড় থাকে জিন্দাবাজার ও আম্বরখানা এলাকার ইফতার বিক্রির দোকানগুলোতে। এর মধ্যে জিন্দাবাজারের পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট, পানসী রেস্টুরেন্ট, ভোজন বাড়ি, পালকি রেস্টুরেন্ট, মা রেস্টুরেন্ট, ব্রিকলেন  আম্বরখানা এলাকার বসুন্ধরা রেস্টুরেন্ট, শরীফ বেকারি, ঢাকা বেকারি এবং বন্দরবাজারে পারশী রেস্টুরেন্ট হরেক রকমের খাবার বিক্রিতে এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও রোজা উপলক্ষে রাস্তায় ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেন মৌসুমি বিক্রেতারা। অন্যদিকে সিলেটের অভিজাত কয়েকটি রেস্টুরেন্টে সেট ম্যানু হিসেবে ইফতার বিক্রি হয়। ইফতারে খাবার ও পানীয় মিলিয়ে দাম ধরা হয় ২০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত।

নগরের জিন্দাবাজারের পানসী রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেস্টুরেন্টে সাধারণত সেট ম্যানুর পাশপাশি খুচরা ইফতার বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে ভারি খাবারের মধ্যে ক্রেতাদের চাহিদায় রয়েছে পাতলা খিচুড়ি, আখনি ও ভূনা খিচুড়ি দিকে।

তিনি জানান, সিলেটের মানুষ ইফতারে পাতলা খিচুড়ি বেশি পছন্দ করে থাকেন। সব বয়সের রোজাদাই এই ইফতার পছন্দ করেন বলে তিনি জানান। পানসি রেস্টুরেন্টে প্রতি কেজি পাতলা খিচুড়ি ৭০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় ২০০ কেজি পাতলা খিচুড়ি বিক্রি হয়। আখনি বিক্রি হয় ১০০-১৫০ কেজি দরে। গরুর মাংসের আখনি ২৭০ টাকা, মুরগীর মাংসের আখনি ২২০ টাকা।

জিন্দাবাজার পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্টের পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, রোজায় রেস্টুরেন্টে প্রতিদিনই প্রায় ৫০০-৭০০ মানুষ ইফতারি করেন। সেই সঙ্গে ইফতারও বিক্রি হয়। এর মধ্যে পাতলা খিচুড়ি ও মাংসের আখনির প্রতি ক্রেতাদের চাহিদা বেশি।বিক্রির অপেক্ষায় খিচুড়ি ও আখনি (ছবি-ে সিলেট প্রতিনিধি)

ব্রিকলেনট রেস্টুরেন্টের পরিচালক আবু তালেব মুরাদ জানান, তার রেস্টুরেন্টে প্রতিদিনই খিচুড়ি ও আখনিসহ নানা ইফতার বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়া রেস্টুরেন্টে সেট ম্যানু রয়েছে ২০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত।

সিলেটের নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউট্রিশিয়ান ডা. শাহনাজ বেগম জানান, রোজা রাখার পর শরীর অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। সারাদিন অভুক্ত থেকে ভাজা পোড়া খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রকট আকারে ধারণ করার সম্ভবনা রয়েছে। ইফতারে নরম খিচুড়ি স্বাস্থ্য সম্মত। রমজান মাসে মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলায় ভালো বলেও জানান তিনি।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: নড়াইলে চাল সংগ্রহ অভিযানে সাড়া দিচ্ছেন না কৃষকরা