মণিপুরি ‘লাই-হারাওবা’ উৎসব চলছে

মনিপুরিরা লাই-হারাওবা উৎসব পালন করছে

‘লাই-হারাওবা’ উৎসব চলছে। লাই শব্দের অর্থ দেবতা, হারাওবা অর্থ আনন্দ এবং জাগোই অর্থ নৃত্য। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে তিন দিনব্যাপী মণিপুরি লাই-হারাওবা উৎসবমূখর পরিবেশ চলছে। উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘উজাও-লাইরেম্বী লাইশং’ মন্দির প্রাঙ্গণে (১৭ মে) এই ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। এই ধর্মীও উৎসব শেষ হবে শনিবার। মৈতৈ মুণিপুরি জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত অতি প্রাচীন এই ধর্মীয় উৎসবে যোগ দিতে ১৯ সদস্যের একটি দল ভারতে থেকে মৌলভীবাজারে এসেছে।

উদয়ন সংঘের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবে ধর্মীয় প্রথা অনুযায়ী প্রতিদিন মাইবীর ঐশ্বরীক বাণীসহ লোকগান, লোকনৃত্য ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পরিবেশিত হচ্ছে। 

ধর্মীয় উৎসবে মন্দির প্রঙ্গণে নৃত্য পরিবেশন করছে মণিপুরী নারীরা

কমিটির আহ্বায়ক হামোম তনুবাবু ও সম্পাদক এ হেমন্ত জানান, মুণিপুরি ‘লাই-হারাওবা উৎসব’ মূলত একটি নৃত্য-উৎসব। এই নৃত্যকে মণিপুরি নৃত্যশৈলীর একটি সুপ্রাচীন নৃত্যধারা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মুণিপুরি সমাজে প্রচলিত অন্যতম প্রাচীন লোকনৃত্যানুষ্ঠান ‘লাই হারাওবা জাগোই’ থেকে এসেছে এই ‘লাই-হারাওবা উৎসব।’

এই নৃত্যে প্রকৃতি পূজার পরিচয় মেলে। লাই শব্দের অর্থ দেবতা, হারাওবা অর্থ আনন্দ এবং জাগোই অর্থ নৃত্য। এর ইতিহাস এরকম সৃষ্টিকর্তা যখন জড় ও জীব পৃথিবী সৃষ্টি করলেন এবং পরবর্তীকালে শ্রষ্ঠার মূর্তির অনুকরণে মনুষ্য সৃষ্টিতে সফলতা পেলেন তখন দেবদেবীগণ আনন্দে যে নৃত্য প্রকাশ করেছিলেন তারই নাম দেওয়া হয়েছে হারাওবা নৃত্য। লাই হারাওবা নৃত্যে পৃথিবীর সৃষ্টিতত্ত্ব থেকে শুরু করে গৃহায়ন, শস্যবপন, জন্মমৃত্যু সবকিছুই নৃত্য ও সঙ্গীতের সুর লহরীতে ঝংকৃত হয়। এই নৃত্যের আঙ্গিক অংশগুলো যেমন লৈশেস জাগোই (সৃষ্টিনৃত্য), লৈতা জাগোই (গৃহায়ন নৃত্য) লৈসা জাগোই (কুমারী নৃত্য) প্রভৃতি মুণিপুরি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে লোক সংস্কৃতি হিসেবে প্রদর্শিত হয়। যাহা এ উৎসবে পরিবেশিত হচ্ছে।