ভিন্ন আয়োজনে ঈদ উদযাপন হাওরবাসীর

বালিশ খেলায় অংশ নেন কৃষকরা‘বুড়া বয়সে আবার যুবক হইলাম পিছলা বাঁশের খেলায় অংশ নিয়ে।’ কৃষকদের ঈদ আনন্দ আয়োজনে অংশ নিয়ে এমনটাই অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন আব্দুল মালেক।  খেলা দেখতে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব মনফর আলী। কৃষকের ঈদ আনন্দের খবর পেয়ে পাতারগাঁও গ্রাম থেকে তিনি ছুটে এসেছেন তাহিরপুর উপজেলা সদরে। তিনি বলেন,  ‘আমরার ঘরে গোলা ভরা ধান না থাকলে কী হইবো, আইজ খেলা দেখতে আইয়া মনে হয় আমি ২৫ বছরের যুবক।’

7

ঈদ উপলক্ষে সুনামগঞ্জের তাহিপুরের হাওরবাসীদের জন্য উপজেলা প্রশাসন উৎসবের আয়োজন করেছিল। এর মধ্যে ছিল বালিশ খেলা, তৈলাক্ত বাঁশ পাড়ি দেওয়া, রশিটান ও পাতিল ভাঙাসহ নানা গ্রামীণ খেলাধুলার। এসব আয়োজনে বিভিন্ন বয়সের অর্ধশত কৃষক অংশগ্রহণ করেন। ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কয়েকশ’ কৃষক ছুটে আসেন। দীর্ঘদিন পর এরকম আয়োজনে শামিল হতে পেরে কৃষকরা খুবই আনন্দিত।

4তাহিরপুর উপজেলা সদর শনির হাওর প্রাঙ্গণে রবিবার (১৭ জুন) বেলা ১২টা থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে কৃষকদের ঈদ অনুষ্ঠান। তাহিরপুর উপজেলা সদরের কমপক্ষে ২০ গ্রামের কৃষকরা খেলা উপভোগ করেন।

খেলা দেখছেন হাওরবাসী

টাকাটুকিয়া গ্রামের মনধন দাস বলেন, ‘গেরামের হগলেই খেলাধুলা করে। কিন্তু বুড়ো মানুষের আনন্দের জন্য কেউ কিছু করে না। এবার উপজেলা চেয়ারম্যান যে কাজ করছে তা আজীবন মনে রাখবো।

3খলাহাটি গ্রামের সিদ্দির মিয়া বলেন, ‘একদিনের লাইগা অইলেও খেলা দেখতে আইয়া যে মজা পাইছি তা কোনোদিন ভুলার না।’ প্রতি বছর প্রশাসন যেন খেলার আয়োজনের আহ্বান জানান উপজেলা প্রশাসনের প্রতি।

বালিশ খেলায় অংশ নেন কৃষকরা

তাহিরপুর উপজলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, পরপর দু’বার ফসলহারা কৃষকদের আনন্দ দিতে উপজেলা পরিষদ কৃষকের ঈদ আনন্দের আয়োজন করা হয়েছে। দুই বছর সুনামগঞ্জের হাওরে ফিরে এসেছে ঈদের আনন্দ। পরপর দু’বার ফসলহানির পর এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন আর ঈদের আনন্দকে কৃষকের মাঝে বিলিয়ে দিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সদরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে কৃষকের ঈদ আড্ডার।

8

খেলাধুলার পরপর সফল ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণকারীদের মধ্যে সম্মাননা তুলে দেন উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল। এবছর পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) হাওর পাড়ের কৃষকদের নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার ফলে আগাম বন্যার পানিতে বোরো ধান বিনষ্ট হয়নি। তাই কৃষকদের দাবি, প্রতিবছর যেন পিআইসি’র মাধ্যমে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়।