স্থগিত কেন্দ্রে ভোট আজ: ফুরফুরে মেজাজে আরিফ, চিন্তায় কামরান

আরিফুল হক চৌধুরী ও বদর উদ্দিন আহমদ কামরান (ছবি : সংগৃহীত)সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে স্থগিত দুই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আজ শনিবার (১১ আগস্ট)। আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে থাকায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। এদিকে, পরাজয়ের চিন্তায় আছেন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। গত ৩০ জুলাই সিটি নির্বাচনে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এই দুটি কেন্দ্র থেকে ফলাফল ঘোষণা না হওয়ায় আটকে আছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ফল ঘোষণা।

দুই কেন্দ্রের নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর বাইরে অন্য কোনও মেয়র প্রার্থীকে দেখা যায়নি। তবে এই দুজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণায় সরব রয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দিন-রাত সমানতালে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। জয় ছিনিয়ে নিতে ওই দুটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ওই দুটি ওয়ার্ডে শুক্রবার (১০ আগস্ট) বিকাল থেকেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩৪টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় অনিয়মের কারণে দুপুরের দিকে গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এরপর সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করে। ওই ফলে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এগিয়ে আছেন ৪ হাজার ৬২৬ ভোটে। এরমধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রে আরিফুল হকের প্রাপ্ত ভোট ৯০ হাজার ৪৯৬ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের প্রাপ্ত ভোট ৮৫ হাজার ৮৭০। এদিকে স্থগিত হওয়া ওই দুটি ভোট কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ৪ হাজার ৭৮৭।

বিএনপির মেয়র প্রার্থীর আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি শতভাগ আশাবাদী স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের ভোটাররা আমাকে আগের মতোই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। জয়ের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত রয়েছি।’ এই দুটি কেন্দ্রে যাতে ভোটাররা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারেন সেজন্য নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য তিনি সিলেট নির্বাচন অফিসের প্রতি আহ্বান জানান।

আরিফুল হক আরও জানান, স্থগিত হওয়া গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই হাজার ২২১ ভোটারের মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও বিদেশে আছেন ৮০ জন। অন্যদিকে স্থগিত হওয়া হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার ২ হাজার ৫৬৬। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮০ জন ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আছেন ৮০ জন। ওয়ার্ড ছেড়ে চলে গেছেন ২৫-৩০ জন। এসব বিষয় নিয়ে তিনি লিখিতভাবে সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদি অভিযোগ না করতাম তাহলে দেখা যেত মৃত মানুষরাই ভোট দিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ কী করতে পারে তা তারা ৩০ জুলাই দেখিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে জনগণ থাকায় তারা আমার জয় ছিনিয়ে নিতে পারেনি।’

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। এই দুটি কেন্দ্রে যে ফলাফলই আসুক আমরা তা মেনে নেবো। জয়ী হই কিংবা না হই সিলেটের মানুষের সুখে দুঃখে সব সময়ই পাশে থাকবো।’

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা আলিমুজ্জামান বলেন, ‘সিলেট সিটি করপোরেশনের স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে শনিবার। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যাতে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, সিলেট গাজী বুরহানউদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটার সংখ্যা ২২২১ ও হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটার সংখ্যা ২৫৬৬। সব মিলিয়ে ভোটের সংখ্যা ৪৭৮৭।