নদী ভাঙনের শিকার স্থানীয়রা জানান, নদীর পানি যখন বাড়তে থাকে, আবার সেই পানি যখন নামতে থাকে— তখন তীরবর্তী এলাকার ফসলি জমি ও স্থাপনা ভাঙনের কবলে পড়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হলেও তা কোনও কাজে আসছে না। ফলে প্রতিবছরই নদী তরিবর্তী জনপদের আয়তন ছোট হয়ে আসছে। নদী ভাঙনরোধে স্থায়ী কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে অচিরেই পাঁচটি উপজেলার কয়েকশ’ ঘরবাড়ি, কৃষিজমিসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এ্কই গ্রামের বাসিন্দা চাঁনমালা বেগম জানান, কয়েক বছরের ভাঙনে তাদের কৃষি জমি, বাঁশের ঝাড়সহ মূল্যবান স্থাপনা নদীতে চলে গেছে। তার পরিবারের ৩০ শতক জমি ছিল,এখন তা পাঁচ শতকে এসে দাঁড়িয়েছে। ২৫ শতক জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।
গৃহবধূ জয়তারা বিবি জানান, ‘নদীতে তার বসত ঘর,বাঁশের ঝাড়, আম- কাঁঠালের বাগান, তিনটি নারিকেল গাছ চলে গেছে। এখনও নদী ভাঙন থেমে নেই। ভরা বর্ষায় নদী না ভাঙলেও হেমন্তে ও বর্ষার শুরুতে ব্যাপক আকারে ভাঙন দেখা দেয়। তিনি বলেন, ‘পানির তীব্র স্রোতে আর চাপে নদী নীচের দিকের মাটি সরে গিয়ে একের পর এক স্থাপনা নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। যেকোনও সময় তাদের বসতবাড়ি নদীতে চলে যাবে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দিলশাদ আলী বলেন, ‘সুরমা নদীর ভাঙনে আমবাড়ি বাজার, ধনপুর, হাজারিগাঁও গ্রামের অনেক বসতঘর নদীতে চলে গেছে। ধনপুর গ্রামের জামে মসজিদ, আমবাড়ি বাজারের দোকানপাট সব নদীতে চলে গেছে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পুরো আমবাড়ি বাজার, ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবনও নদীগর্ভে চলে যাবে।’
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষন) খুশি মোহন সরকার বলেন, ‘জেলার নদী ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোর ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এগুলো অনুমোদন পেলে ভাঙন রোধে কাজ শুরু হবে।’