অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও সীমান্তের ওপার থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, দোয়ারাবাজার উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এসব উপজেলা বেশিরভাগ সড়ক পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। কয়েক দিনের পানিবন্দি হাওরবাসীর অনেকেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। ঘরবাড়িতে পানি ওঠে যাওয়ার কারণে তারা রান্না করা খাবার খেতে পারছেন না। আবার অনেকেই সম্পদের সুরক্ষায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও যাচ্ছেন না।
মাধ্যমিক শিক্ষ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাঁচটি উপজেলার ৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।’
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পওর (১) আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া বলেন, ‘বন্যাপূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী আগামী তিন দিন এখানে বৃষ্টিপাত হতে পারে। প্রতিঘণ্টায় পানি বাড়ছে। সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়া সীমান্তের ওপারে মেঘালয় রাজ্যে ভারী বর্ষণ হওয়ায় প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢলের পানি জেলার সবকটি নদনদী দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফজলুর রহমান জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় দুর্গতদের মধ্যে ৩শ মেট্রিকটন চাল, ৩ হাজার ৭৬৫ প্যাকেট শুকনো খাবার ও আড়াই লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে আরও ২শ মেট্রিক টন চাল, ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, ‘পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ প্রশাসনের কাছে রয়েছে, তা প্রতিদিন উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে।’
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রনজিত চৌধুরী রাজন বলেন, ‘সকালে ফতেহপুর ইউনিয়নের দুর্গতদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। দুর্গতদের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।’ তিনি সরকারের কাছে ত্রাণের পরিমাণ বাড়ানোর দাবি জানান।
হাওর বাঁচাও ও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, ‘লাখো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। মেডিক্যাল টিম যথাযথভাবে কাজ না করছে না। ত্রাণের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন, বিশেষ করে শুকনো খাবারের প্যাকেট বাড়ানো দরকার।’