জেলা প্রশাসন থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম, রাজনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ২৩টি গ্রাম ও কমলগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ২২টি গ্রাম, কুলাউড়া উপজেলার দুটি ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, ৯৭ হেক্টর আউশ ফসল ও ৩৮ হেক্টর বীজতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকাল পৌনে ১১টায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মনু নদীর পানি মনু রেল সেতু এলাকায় বিপদসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট সেতু এলাকায় মনু নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সদর উপজেলার বন্যাকবলিত তিনটি ইউনিয়নে ১ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৯ মেট্রিক টন চাল দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) জানিয়েছেন, বন্যা মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতি রয়েছে। এর মধ্যে ৭০ হাজার প্যাকেট পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুদ আছে। ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোগে খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।
সদর উপজেলায় দুটি আশ্রয়কেন্দ্র (শেরপুর আজাদ বখত উচ্চ বিদ্যালয়, হামোরকোনা মাদ্রাসা) রাজনগর উপজেলায় তিনটি ও কমলগঞ্জ উপজেলায় দুটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সাতটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ২২০টি পরিবার। খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে ৪২৯ মেট্রিক টন। জিআর চাল ও শুকনো খাবার মজুদ আছে ১ হাজার প্যাকেট। ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ রয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলায় ৭ মেট্রিক টন চাল ও ২০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
কুলাউড়া উপজেলায় ৫ মেট্রিক টন চাল ও ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ হয়েছে। রাজনগর উপজেলায় এসেছে ৫ মেট্রিক টন চাল ও ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার। এ পর্যন্ত মোট ২১ মেট্রিক টন চাল ও একহাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। জেলায় কাজ করছে ৭৪টি মেডিক্যাল টিম।
এদিকে মৌলভীবাজার মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা অফিসার আবু সাঈদ মো.আব্দুল ওয়াদুদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, মৌলভীবাজার জেলায় ১২টি বিদ্যালয় বন্যার পানিতে নিমজ্জিত। এর মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তিনটি বিদ্যালয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মালেকা পারভীন জানান, ২৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে। এর মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে ৪টি বিদ্যালয়।
শনিবার রাতে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের হামোরকোনা এলাকার ভাঙন দিয়ে ব্রহ্মণগাঁও, দাউদপুর ও হামোরকোনা গ্রামে পানি ঢুকেছে। এছাড়া কুশিয়ারার পানি উপচে উঠে রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে।