বিক্রি করতে না পেরে চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলা হয় : তদন্ত কমিটি

তদন্ত কমিটির ঘটনাস্থল পরিদর্শনবিক্রি করতে না পেরেই সৈয়দপুর হাফিজিয়া হোসাইনিয়া দারুল হাদিস মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোরবানির পশুর চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর সাহারপাড়া ইউনিয়নের এই মাদ্রাসাটি মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে চামড়াগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলে। এই ঘটনার পর উপজেলা প্রশাসনের গঠন করা তদন্ত কমিটির সদস্যরা বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১২টায় মাদ্রাসা ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন।

তদন্ত কমিটির সদস্য জগন্নাথপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার নব কুমার সিংহ বলেন, ‘বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে আমরা মাদ্রাসা ক্যাম্পাস সরেজমিনে পরিদর্শন করি। বিকাল ৫টা পর্যন্ত ওই এলাকায় পরিদর্শন করেছি। আমরা দেখেছি, চামড়া পুঁতে রাখা জায়গা থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মাটির নিচে গ্যাসের কারণে চামড়াগুলো ফুলে ওঠে মাটি ভেদ করেছিল। পরে ব্লিচিং পাউডার বালি ও মাটির আস্তর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তদন্ত কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক ও স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। তারা জানান, সংগৃহীত চামড়া বিক্রি করতে না পারায় পরিবেশ রক্ষা করতে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি লিখিত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুল আলম বলেন, ‘বিকালে আমি মাদ্রাসা ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। মূলত ক্রেতা না পাওয়ায় ও চামড়া থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়ার কারণে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সংগৃহীত চামড়াগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সিলেটে চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু তারাও কিনতে রাজি না হওয়ায় মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চামড়ার গন্ধে যেন এলাকার পরিবেশ দূষিত না হয়, সেজন্য প্রশাসন ১০ কেজি ব্লিচিং পাউডার, মাটি ও বালির আস্তর এবং পলিথিন দিয়ে চামড়া পুঁতে ফেলার জায়গা ঢেকে দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন রাতেই (১৪ আগস্ট) জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে সৈয়দপুর সাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের সৈয়দপুর হাফিজিয়া হোসাইনিয়া দারুল হাদিস মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ৮০০ পিস গরুর চামড়া ও ৯৫ পিস ছাগল,বকরি ও ভেড়ার চামড়া মাটির নিচে পুতে ফেলেন।

মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা সৈয়দ ফখরুল ইসলাম জানান, চামড়াগুলো বিক্রির জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু, কোনও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। তাই মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তৈয়ব মিয়া কামালীকে প্রধান করে উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর লতিফুল বারী ও উপজেলা ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার নব কুমার সিংহকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।