পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সুনামগঞ্জে সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, রক্তি, পুরাতন সুরমা,খাসিয়ারামারা, চলতি, চেলাই নদীসহ জেলার সবক’টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। রবিবার (১৯ জুলাই) সকাল থেকে সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে চলমান বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করেছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রথম ও দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার ১১টি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। তার উপর তৃতীয় দফায় পানি বৃদ্ধিও কারণে দুর্গত মানুষ আরও বেশি বিপাকে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শক্তিরখলা, দিরাই, সুনামগঞ্জ, মুসলিমপুর, ডলুরা, আক্তাপাড়া, জগন্নাথপুর, সোলেমানপুর স্টেশনে সুরমা, ঝালুখালি, পুরাতন সুরমা, মহাসিন, নলজুর, পাটলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে পরপর দুই দফা বন্যায় জেলার ২৫টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ৯০০ কিলোমিটার সড়ক ও অর্ধশতাধিক সেতু ও কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এছাড়া উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর মধ্যে ২২টি ওয়াশ আউট হয়ে গেছে।
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলম বলেন, পরপর দু’দফা বন্যায় জেলার সড়ক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের বন্যার ক্ষতচিহ্ন ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে। প্রথম পর্যায়ের বন্যায় ৯০০ কিলোমিটারের বেশি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে তারা আরও কয়েকশ’ কিলোমিটার বাড়তে পারে। অর্ধশতাধিক সেতু ও কালর্ভাটের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জেলার ২২টি সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সুত্রে জানাযায়, জেলার ৮৭টি ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভার ২২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে একহাজার ১০৬টি পরিবারের ৭ হাজার ৫১৯ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় ১ লাখ ৮ হাজার ৩২৯টি পরিবার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২ লাখ টাকার গোখাদ্য দুই লাখ টাকার শিশু খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানান, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় উজানে ও সুনামগঞ্জ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকলে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে অতিবৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে বন্যা প্রলম্বিত হবে।