সূত্র মতে, ২০০৪ সালের ২১ জানুয়ারি আজমিরীগঞ্জ উপজেলা সদরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তখন প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। একই বছরের ডিসেম্বরে প্রশাসক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক। এরপর শুরু হয় ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কার্যক্রম। তবে উপজেলা সদরের নোয়াগাঁও, ফতেহপুর ও শুক্রবাড়ি গ্রাম পৌরসভা থেকে বাদ পড়ে। গ্রাম তিনটি পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে উচ্চ আদালতে রিট করেন তৌহিদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্ড বিভক্তিকরণ কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন আদালত। এরপর কেটে যায় ১৪ বছর।
এই দীর্ঘ সময়ে পৌরসভায় কোনও মেয়র না থাকায় থমকে রয়েছে উন্নয়ন। অপ্রশস্ত রাস্তা-ঘাটের কারণে দিনের পর দিন লেগে থাকে যানজট। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য নির্বাচন চান পৌরবাসী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার আলী বলেন, ‘বিএনপি নেতা গোলাম ফারুক বর্তমানে পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকায় স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যক্তিগত লোক দিয়ে মামলা দায়ের করিয়ে আইনি জটিলতা সৃষ্টি করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘পৌর প্রশাসক নিজেই ইচ্ছামতো আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন ধরে পৌর প্রশাসকের পদ আটকে ধরে আছেন। পৌর প্রশাসক অসুস্থতার নাম করে হবিগঞ্জ শহরে অবস্থান করে প্রশাসকের পদ চালাচ্ছেন। এ কারণে আজমিরীগঞ্জ পৌরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সময়মতো কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতি বছর কোটি টাকা আয় হলেও জনগণের ভাগ্যে কিছুই জোটে না।’ তিনি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনি জটিলতা কাটিয়ে জনগণের ভোটাধিকারের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পৌর শহরের হোটেল ব্যবসায়ী সজিব মিয়া বলেন, ‘শুধু নামে মাত্রই আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা, কাজের বেলাই কিছুই নেই। প্রতি বছর অনেক রাজস্ব আদায় হলেও পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের কোনও উন্নয়ন নেই। জনগণকে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’ তিনি জনগণের ভোটে মেয়র নির্বাচনের দাবি জানান।
আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘জরাজীর্ণ পরিত্যক্ত একটি ভবনে ভাড়ায় চলছে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার কার্যাক্রম। গাড়িগুলো অব্যবহৃত থাকার কারণে প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে। তবে নির্বাচিত মেয়র না থাকলেও উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে না। পৌর নাগরিকরা যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন। আমি চাই, পৌরসভায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকুক, কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে তা হচ্ছে না। এ লক্ষ্যে আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মতিউর রহমান বলেন, ‘সীমানা জটিলতা নিয়ে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এ বছর নির্বাচন হবে না বলে জানানো হয়েছে। তবে পরবর্তী কোনও নির্দেশনা এলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’