দেশেই উৎপাদন হলো ‘হোয়াইট টি’

প্রথমবারের মতো সফলভাবে দেশে উৎপাদন হয়েছে ‘হোয়াইট টি’। মেশিন ছাড়া হাতে তৈরি হওয়ায় এই চায়ের গুণগত মানও বিদেশি হোয়াইট টি-এর চেয়ে ভালো। ইতোমধ্যে বাজারে এসে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই চা, প্রতি কেজি নিলামেই বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার ১০ টাকা দরে। দেশে এই চায়ের উৎপাদন করে সফলতার মুখ দেখলো হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার বৃন্দাবন চা বাগান।

এই চায়ের রঙ পিত-হলুদ বা পিতলের মতো হলুদ। এর মূল রঙটা সবুজ ও হলুদ রঙের মাঝামাঝি। একে হোয়াইট টি বলার কারণ হলো এর গায়ে সাদা লোম রয়েছে। একে কেউ কেউ ‘সিলভার নিডল হোয়াইট টি’ বা রূপার সুঁইয়ের মতো সাদা চা-ও বলে।

বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে দেশের দ্বিতীয় চা নিলাম কেন্দ্র শ্রীমঙ্গলের ১৭তম নিলামে তোলা হয় এই হোয়াইট টি। মাত্র ১০ কেজি চা তোলা হয় এই দিন। হোয়াইট টি তৈরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করেছেন বৃন্দাবন চা বাগানের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন খান।

বৃন্দাবন চা বাগানের সহকারী ম্যানেজার সাজিদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, হোয়াইট টি তৈরি করতে বেশ শ্রম দিতে হয়েছে বাগান কর্তৃপক্ষকে। ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার নিজেরাই পাতা উত্তোলন করেছেন বাগান থেকে। পাশাপাশি এই চা তৈরির জন্য বিশেষ পাতাগুলো উত্তোলন করতে আলাদা শ্রমিক নিয়োগ ও তাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই শ্রমিকদের মজুরিও দিয়েছেন দ্বিগুণ।

হোয়াইট টি বানাচ্ছেন নাসির উদ্দিন খানচায়ের উদ্ভাবক বৃন্দাবন চা বাগানের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন খান বলেন, ‘এই হোয়াইট টি দীর্ঘদিনের গবেষণা ও পরিশ্রমের ফল। এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে ১০ কেজি হোয়াইট টি তৈরি করেছিলাম। পরিকল্পনা রয়েছে আগামী বছর ব্যাপক আকারে উৎপাদন করার। তবে সেক্ষেত্রে মেশিনের প্রয়োজন। তাই এই মেশিন নিয়ে আসতে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করছি।

চা গবেষক মাহমুদ হাসান প্রিন্স বলেন, ‘বৃন্দাবন চা বাগান এই প্রথম তাদের বাগানে হোয়াইট টি উৎপাদন করেছে। যা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমি তাদের তৈরি হোয়াইট টি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, এর গুণগত মান অত্যন্ত ভালো।’

প্রসঙ্গত, এর আগেও চা শিল্পে নতুন সম্ভাবনা দেখিয়েছে বৃন্দাবন চা বাগান। তাদের তৈরি বিষমুক্ত নিরাপদ ‘গ্রিন টি’ রেকর্ড মূল্যে অর্থাৎ প্রতিকেজি ২৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সেবার ওই বাগান থেকে ১০০ কেজি ‘গ্রিন টি’ উৎপাদন করা হয়।