এবার চায়ের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

সময়মতো বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার চায়ের বাম্পার ফলন হবে বলে জানিয়েছেন চা বাগানের প্লান্টাররা। এসময়ের এই বৃষ্টিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাবে চা গাছ। ফলে গাছে গাছে আসবে নতুন কুঁড়ি, গজাবে আগাম পাতা। ধুম বৃষ্টির ছোঁয়ায় নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে চারা গাছ (ইয়ং টি)।

দেশে ১৬৭টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় মোট ৯৩টি চা বাগান। বিশেষ করে মার্চ মাসে দেশের অধিক বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। শুধু বৃষ্টিপাত নয়, চলতি বছরের মার্চ মাসে ৯ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করেছিল শ্রীমঙ্গলে।

পরিসংখ্যানে জানা গেছে, গত ১ মার্চ শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ৩১ মার্চ সেই তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

যে নয়দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে সেই তারিখগুলো হল: ১৩ মার্চ ১৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১৫ মার্চ ১৬ দশমিক ৭, ১৭ মার্চ ১৭ দশমিক ২, ১৮ মার্চ ১৫ দশমিক ৮, ১৯ মার্চ ১৬ দশমিক ৪, ২৩ মার্চ ১৬ দশমিক ৪, ২৪ মার্চ ১৮ দশমিক ২, ২৮ মার্চ ১৫ দশমিক ৩, এবং ৩১ মার্চ ১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পুরো মার্চজুড়ে সিলেট এবং শ্রীমঙ্গলেই দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সিলেটের অঞ্চল চায়ের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। ৭ মার্চ, ৯ মার্চ, ৩০ মার্চ এবং ৩১ মার্চ সিলেটের মোট রেকর্ডকৃত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩১ মিলিমিটার। আর সেই তারিখগুলোতে শ্রীমঙ্গলে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড ১১৬ মিলিমিটার।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়া সহকারী আশরাফুল আলম বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে তুলনামূলকভাবে শ্রীমঙ্গলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এর অন্যতম কারণ পাহাড়ি অঞ্চল।

শ্রীমঙ্গল নাহার চা বাগানের ব্যবস্থাপক পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বৃষ্টি হওয়াতে আমরা স্বস্তিতে আছি। প্রথমদিকে শিলা বৃষ্টি হওয়াতে চা বাগানে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে গত বছরের চেয়ে এবার উৎপাদন বেশি হবে যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে।

বাংলাদেশিয় চা সংসদ (বিটিএ) সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান ও ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, সময়মত বৃষ্টি হওয়াতে চায়ের জন্য আশীর্বাদ। চায়ের নতুন কুঁড়ি বেশি করে গজাবে। সার্বিক দিক বিবেচনায় চায়ের উৎপাদন এবার ভাল হবে। তিনি আরও বলেন, অধিক বৃষ্টিপাতের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রায় দেড়শ’ বছর আগে ব্রিটিশরা এখানে চা আবাদ শুরু করে। না হলে দেশের অন্য জায়গাই তারা চায়ের আওতায় নিয়ে আসতো। এখানে উঁচুনিচু টিলাঘেরা এ অঞ্চলের পাহাড়ি জায়গাগুলো চায়ের জন্য অত্যন্ত উপকারী। যার ফলে সিলেট বিভাগে চায়ের আবাদ শুরু হয়।