শিশুকে ৩ বছর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ

 

 

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শহরতলীতে ১০ বছরের এক শিশুকে তিন বছর ধরে আটকে রেখে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শহরের মুসলিমবাগ এলাকার ‘পাখির বাসা’ নামক একটি বাসায় বাবা ও ছেলে মিলে এ নির্যাতন চালিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ করেছে উদ্ধার হওয়া শিশুটি।  

শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের মুসলিমবাগ আবাসিক এলাকায় ওই বাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এর আগে, শুক্রবার রাতে শিশুটি নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে পাশের বাসায় আশ্রয় নেয়। এ খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়রের ভাতিজা রাজ ও ভাই শাহীন আহমেদ এবং ইসমাইল হোসেন নামে কয়েক যুবক শিশুটিকে উদ্ধারে উদ্যোগ নেন। তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ও স্থানীয়দের সামনেই শিশুটি তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেয়। পরে পুলিশ শিশুটিকে নির্যাতনের অভিযোগে রনি শেখের ছেলে হাসানকে আটক করে।

নির্যাতনের শিকার শিশুটি নিজের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার চম্পারাই চা বাগানে বলে জানিয়েছে। সে তার বাবার নাম বলতে পারেনি। বাদল নামে এক ব্যক্তিকে সে বাবা বলে ডাকে।   

শিশুটি গণমাধ্যমকর্মীকে জানায়, ছোটবেলায় তার বাবা মারা যায়। সেই থেকে বাদলকে সে বাবা বলে জানে। প্রায় তিন বছর আগে বাদল শ্রীমঙ্গলের ওই বাসায় কাজের জন্য তাকে রেখে যায়। এরপর আর কেউ শিশুটির খবর নেয়নি। ফোনেও খোঁজ নেয়নি কেউ। আর এই তিন বছর রনি শেখ ও তার ছেলে হাসান যৌন নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করে শিশুটি। 

শিশুটির অভিযোগ, ‌‘পা টিপে দেওয়ার কথা বলে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করতো। বাধা দিলে লাথি দিয়ে ফেলে দিত। রনি শেখের স্ত্রী রোশনা বেগমও লাঠি দিয়ে মারধর করতো।’ এ সময় শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে জামার অংশ খুলে পিঠে বিভিন্ন ক্ষত দেখায় স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা জানান, অন্য দিনের মতো শুক্রবার রাতেও রনি শেখ ও তার পরিবারের লোকজন শিশুটির ওপর নির্যাতন চালায়। পরিধানের জামাও ছিড়ে ফেলে। একপর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শিশুটি বাসার দেয়াল টপকে পাশের আব্দুল বাসিত নামের একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। আব্দুল বাসিত ঘটনা শুনে তাকে রাতে আশ্রয় দেন এবং শনিবার সকালে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান।

স্থানীয় আব্দুর রব জানান, প্রায়ই ওই বাসা থেকে কান্নার শব্দ শোনা যেতো। ১৫ দিন আগে মেয়েটি তার বাসায় এসে নির্যাতনের কথাও জানিয়েছে। পরে রনি শেখ বুঝিয়ে মেয়েটিকে আবার তার বাসায় নিয়ে যান।

জানতে চাইলে রনি শেখ নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটির মানসিক সমস্যা রয়েছে। মেয়েটি প্রায়ই এরকম মিথ্যা কথা বলে।

শ্রীমঙ্গল থানার এসআই তীতংকর বলেন, রনি শেখের ছেলে অভিযুক্ত হাসানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।