পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন, তলিয়েছে ৫০০ একর জমির ধান

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় হাওরের ৫০০ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে আরও কয়েকশ' একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় আধাপাকা ধান কাটছেন কৃষকরা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে তাও ঠিকমতো ঘরে তোলা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে।  

স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবারের পর থেকে হঠাৎ করে উজান থেকে হবিগঞ্জের হাওরগুলোতে পানি আসতে শুরু করে। গত দুই দিনে লাখাই উপজেলার স্বজন হাওরে অব্যাহত পানি বাড়ার কারণে ৫০০ একর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। আরও কয়েকশ' একর জমির ধানও দ্রুতই তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

এ অবস্থায় স্থানীয় কৃষকরা জমির আধাপাকা ধান কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পানি বেড়ে যাওয়ায় হাওরের ধান কাটতে শ্রমিকপ্রতি কৃষকদের গুনতে হচ্ছে তিন হাজার টাকা। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। 

স্বজন গ্রামের কৃষক নিশি জানান, আমাদের এলাকায় কোনও বৃষ্টিবাদল নেই। হঠাৎ করে উজান থেকে পানি আসতে শুরু করে। গত দুইদিনে আমাদের হাওরের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। কিছু জমির ধান এখনও পানির উপরে আছে, তবে যেভাবে পানি বাড়ছে মনে হয় তাও তলিয়ে যাবে। আমরা কোনও উপায় না দেখে আধাপাকা জমির ধান কাটতে শুরু করেছি। 

তিনি আরও বলেন, শ্রমিক সংকট থাকায় দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দিয়ে শ্রমিকদের কাজ করাতে হচ্ছে। তবে যে ধান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে শ্রমিকের মজুরির খরচও উঠবে না বলে আক্ষেপ করেন এ কৃষক।  

একই গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢল আমাদের সর্বশান্ত করেছে। আর কয়েকটা দিন সময় পেলেই ধান কেটে বাড়িতে তেলা যেতো। কিন্তু উজান থেকে নেমে আসা পানি আমাদের সবকিছু নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, এখন যা আছে তাও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। 

স্থানীয় কৃষক দেবাশীষ দাশ বলেন, লাখাই উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০০ একর জমির ধান একেবারে তলিয়ে গেছে। তলিয়ে যাওয়া ধান কাটার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় হতাশায় দিন কাটছে কৃষকদের।  

লাখাই উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য বলেন, লাখাই উপজেলার শিবপুর, স্বজনগ্রাম, বেজুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০ হেক্টর জমির ধান সম্পূর্ণভাবে পানিতে ডুবে গেছে। তবে যেটুকু পানিতে ডুবেনি সেসব ধান দ্রুত কেটে ঘরে তুলতে কৃষকদের তাগিদ দিয়েছি। এছাড়া এলাকায় মাইকিং করে দ্রুত ধান কাটার জন্য আহ্বানা জানানো হয়েছে।