সংসারের স্বচ্ছলতা ফেরেনি, লাশ হয়ে ফিরলেন একওয়ান

অভাব-অনটনের সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে জায়গা-জমি বিক্রি করে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার আসায় দেশ ছাড়েন একওয়ান ইসলাম (২২)। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে একওয়ান। তবে সংসারের স্বচ্ছলতা না ফিরলেও, লাশ হয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি। একওয়ানকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছে পরিবার। 

সোমবার (৩ অক্টোবর) একওয়ান ইসলামের বাবা তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চার জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

জগন্নাথপুর থানার ওসি মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার চার আসামির মধ্যে দু’জন প্রবাসী। বাকি দু’জন পলাতক রয়েছেন। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।

আক্ষেপ নিয়ে একওয়ানের বাবা তরিকুল ইসলাম বলেন, দালালের নির্যাতনে আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ছেলেকে পাঠিয়েছিলাম জীবিত আর ফেরত পেলাম লাশ। আমি ন্যায়বিচার চাই। জায়গা-জমি বিক্রি করে ১৯ লাখ টাকা দিয়েও ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না। এখন শুধু আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই।

স্বজনরা জানান, গত বছরের ১৩ এপ্রিল একই গ্রামের লিবিয়ায় অবস্থানরত দালাল আলী হোসেনের মাধ্যমে সাত লাখ টাকায় ইতালি পৌঁছে দেওয়ার চুক্তিতে লিবিয়া যান একওয়ান। সেখানে পৌঁছার পর দালাল চক্র তাকে আটক করে অমানবিক নির্যাতন চালায় এবং মাফিয়ার হাত থেকে প্রাণ রক্ষার কথা বলে ২৩ এপ্রিল আরও সাত লাখ টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়। পরে একওয়ানের পরিবার আরও গত ১৫ জুন আরও পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে তাকে ইতালি পাঠানোর চুক্তি করে দালাল আলী হোসন ও তার পরিবারের সঙ্গে। এর দু’দিন পর একওয়ানের বাবা ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানায় একওয়ান ১৬ জুন মারা গেছে। তিন মাস পরে গত বৃহস্পতিবার লিবিয়া ও বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় একওয়ানের মরদেহ দেশে আসে। 

পরদিন শুক্রবার বিকালে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্তের পর গ্রামের বাড়িতে একওয়ানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার দাফন হয়।