দরিদ্র মেধাবীদের উচ্চশিক্ষায় অর্থ দেবে সরকার

 

শিক্ষার্থীরামেধাবীদের উচ্চশিক্ষার পথে দারিদ্র্য আর বাধা হতে পারবে না।  উচ্চশিক্ষার জন্য দরিদ্র মেধাবীদের আর্থিক সাহায্য দেবে সরকার। তাদের ভর্তি ও সেশন ফিসহ অন্যান্য খরচ বহন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা শেষেই কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে তারা। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহয়তা ট্রাস্ট থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তারও  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী বাংলা টিবিউনকে এ তথ্য জানান।  

কেবল এ সহায়তাই শেষ নয়, দরিদ্র অভিভাকদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায়ও আনা হবে। একইসঙ্গে তাদের খাস জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে। এসব কর্মকাণ্ড নিয়মিত মনিটরিং করার ব্যবস্থা রয়েছে সরকারের এই উদ্যোগে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বাংলা টিবিউনকে বলেন, ‘অর্থের অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয়, উচ্চশিক্ষা শেষ করেই তারা যেন কর্মসংস্থানে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলে অনেক মেধাবী লেখা করতে পারছে না, এমন তথ্য পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত দেখা যায়। তাই কোনোভাবেই যেন তাদের শিক্ষাজীবন নষ্ট না হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

মাঠপর্যায়ে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে  জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘প্রকৃত শিক্ষার্থীদের যাচাই-বাছাই করে সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত ২৪ নভেম্বর মাঠ প্রশাসনকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই নির্দেশনায় দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীর তালিকা তৈরি করে তাদের শিক্ষাজীবন অব্যাহত রাখার কথা বলা হয়। আর এসব বিষয় সমন্বয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, নিদারুণ দারিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত কোনও কোনও শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষা নিতে পারছে না। কেউ কেউ  ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ভর্তি হতে পারছে না। আর্থিক সহায়তা পেলে এসব শিক্ষার্থীর উচ্চশিক্ষার পথ সুগম হবে। পরবর্তী সময়ে তারা জাতি গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এ জন্য জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেবেন।

শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশুনায় আগ্রহী কিনা, তা পরীক্ষা করে জেলা প্রশাসকরা ওই শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা নেবেন। শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি, সেশনচার্জ প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা করে দেবেন।

এছাড়া গুরুতর আহত, দরিদ্র ভূমিহীন, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার  সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট আইন এবং ২০১৫ সালের নীতিমালা অনুযায়ী এককালীন অর্থ সহায়তা দিতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশনায়।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়মিত মনিটরিং করব। সুনির্দিষ্ট ও নির্ধারিত ছকে দু’মাস পরপর প্রতিবেদন দেবেন জেলা প্রশাসকরা। শিক্ষা জীবন শেষ হওয়া পর্যন্ত আমরা নিয়মিত খোঁজ রাখব। লেখাপড়া চলা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের খণ্ডকলীন চাকরির ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি টিউশনির জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করবেন জেলা প্রশাসকরা।’

/এমএনএইচ/