নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন নিয়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বীকার করেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠায় পরীক্ষা বাতিলের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিটি।’
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ৩৫ জন প্রার্থী। পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। তবুও পরীক্ষা নেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, একজন প্রার্থীকে পাস করানোর জন্যই পরীক্ষার আগে প্রশ্ন সরবরাহ করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালকের প্রতিনিধি ইনছান আলী। গভর্নিং বডির সভাপতির কাছে ওই প্রতিনিধির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন অভিভাবক ইকবাল হোসেন। এ নিয়ে অভিভাবক ও অন্যান্য শিক্ষকদের মধ্যে পরীক্ষার দিন সৃষ্টি হয় উত্তেজনা।
গত ২৮ অক্টোবর গভর্নিং বডির সভাপতি কাছে অধ্যক্ষের দেওয়া প্রস্তাবে বলা হয়, ‘নিয়োগ পরীক্ষার জন্য বাড়ি থেকে প্রশ্নপত্র তৈরি করে এনেছেন মাউশি মহাপরিচালকের প্রতিনিধি। এই প্রশ্নে পরীক্ষা নিতে নিয়োগ উপ-কমিটিকে চাপ প্রয়োগ করা হয় তার পক্ষ থেকে। পরীক্ষার আগে নিয়োগ উপ-কমিটির আহ্বায়ক যৌথ প্রশ্ন করার প্রস্তাব দিলে উত্তেজিত হন তিনি। একপর্যায়ে আগে থেকে তৈরি করা তার প্রশ্নেই পরীক্ষা নিতে বাধ্য করেন মাউশি প্রতিনিধি।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইনছান আলী হলেন ধানমন্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা উত্তোলন, মহিলা প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, অশোভন, শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য প্রদান ও চাকরি বিধিমালা পরিপন্থী আচরণ।
তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ অক্টোবর মন্ত্রণালয় থেকে ইনছান আলীকে শাস্তিমূলক ঢাকার বাইরে বদলির নির্দেশ দেয়। গত ১৮ অক্টোবর মাউশি বিভাগের উপ-সচিব আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই আদেশে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরও তাকে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য মহাপরিচালকের প্রতিনিধি নিযুক্ত করেছে মাউশি।