উত্তরপত্রে ঘষামাজা: ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ চায় মন্ত্রণালয়

রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তির উত্তরপত্রে কেন ঘষামাজা করা হয়েছে, তা জানতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উত্তরপত্রে ঘষামাজা ও রাবার দিয়ে ভুল উত্তর মুছে সঠিক উত্তর লেখার বিষয়ে ব্যাখ্যাসহ প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশসহ জবাব পাঠাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) শিগগিরই মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশ যাবে।  সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তিতে উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ও রাবার দিয়ে মুছে ভুল উত্তর শুদ্ধ করে লিখে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাস করানোর অভিযোগের প্রমাণ পায় তদন্ত কমিটি। ঢাকা জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ওউচ্চশিক্ষা বিভাগে জমা হয়েছে গত ৮ আগস্ট। তদন্ত প্রতিবেদনে ঘষামাজার প্রমাণ মিলেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঘষামাজা ও রাবার দিয়ে মুছে সঠিক উত্তর লিখে পাস করানোর অভিযোগ ছিল প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে। এ কাজে তাকে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সহাকারী প্রধান শিক্ষক আ. ছালাম খান, তার ভাই প্রকৌশলী আতিকুর রহমান, হিসাব সহকারী দীপা ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মো. কবির হোসেন ও আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে। তবে রাবার দিয়ে মুছে সঠিক উত্তর লেখার সঙ্গে অভিযুক্তদের লেখার সম্পৃক্ততার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি।

তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দাখিলের পর বাংলা ট্রিবিউনে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন প্রকাশের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পদক্ষেপ নিচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা কারণ জানতে চাইবো। অধ্যক্ষের জবাবসহ কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার একটি সুপারিশসহ জবাব পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হবে মাউশিকে। শিগগিরই মাউশিকে চিঠি পাঠানো হবে।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপত্রে ঘষামাজা করার বিষয়টি নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন অভিভাবক শ্যামলী শিমু। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগমের বিরুদ্ধে শ্যামলী শিমুর অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্রে ঘষামাজা করে ভুল উত্তর রাবার দিয়ে মুছে সেখানে শুদ্ধ উত্তর লিখে নম্বর দিয়ে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের পাস করিয়েছেন অধ্যক্ষ। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক আ. ছালাম খান, প্রকৌশলী আতিকুরক রহমান, আফিস সহকারী দীপা, এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কবির ও আতিক।

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর অধিকতর তদন্তের দাবি করেন অভিভাবক শ্যামলী শিমু। উত্তপত্রে কারা ঘষামাজা করেছে তা খূঁজে বের করতে হবে। যারা এ জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদিকে, উত্তরপত্রে ঘষামাজা ও রাবার দিয়ে মুছে ভুল উত্তর সঠিক করে ফেল করা শিক্ষার্থীকে পাস করিয়ে ভর্তি করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম।