অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষকদের স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

সাংবাদিক সংগঠন বিইআরএফ এর সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

দেশের পাঁচ হাজার দুইশ’ অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষকদের (এসিটি) যে কোনও উপায়ে স্থায়ী করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। রবিবার (২৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে শিক্ষা বিষয়ক রিপোর্টারদের সংগঠন বাংলাদেশ এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (বিইআরএফ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এসব শিক্ষকের জন্য নতুন কোনও পদ বের করে স্থায়ী করা হবে। কারণ, তারা অনেক মেধাবী এবং ইতোমধ্যে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আর তাদের বেশিরভাগেরই চাকরির বয়স চলে গেছে। সাধারণত প্রকল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে বিদায় করে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা তা করবো না। তাদের স্থায়ী করার ব্যবস্থা নেবো।’
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) জাবেদ আহমেদকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এসিটিদের স্থায়ী করার ব্যবস্থা নিতে।  
দেশের দুর্গম এলাকায় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ এবং শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞান ভীতি দূর করতে সেকেন্ডারি এডুকেশন কোয়ালিটি অ্যান্ড অ্যাকসেস এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট ( সেকায়েপ) এর আওতায় দুই হাজার একশ প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার দুইশ অতিরিক্ত শ্রেণি শিক্ষক (এসিটি) নিয়োগ করে সরকার। ২০০৮ সালে চালু হওয়া এ প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। গত পাঁচ মাসে প্রকল্পটি সম্প্রসারণ সম্ভব হয়নি। নিয়োগপত্রে চাকরির বিষয়ে বলা ছিল, প্রকল্প সম্প্রসারণ করে অথবা এমপিওভুক্ত করে চাকরি অব্যাহত রাখা হবে। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের বিদ্যমান নীতিমালা এবং এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী এসব শিক্ষককে নিয়োগের কোনও সুযোগ নেই। ফলে এসব শিক্ষককে নিয়োগ দিতে সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় এসব শিক্ষকরা বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে এমপিওভুক্তির।
এসিটি শিক্ষকরা জানান, প্রকল্প সম্প্রসারণ না হওয়ায় হতাশার মধ্যে পড়েন নিয়োগ দেওয়া পাঁচ হাজার দুইশ’ অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষক। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এতে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, শিক্ষার্থীদের হোম ভিজিটের পাশাপাশি সমাজ সচেতনতামূলক কাজে সম্পৃক্ত করা এই শিক্ষকদের। বিশ্বব্যাংক ও সরকারের কাছে এই শিক্ষকরা সমাদৃতও হন।
কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন করে এসব শিক্ষকরা জানান, অতিরিক্ত শ্রেণি-শিক্ষকদের অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। আমাদের প্রকল্প প্রধান ও মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে ক্লাস চালিয়ে যান, ভালো খবর আসবে। আমরা বিনা বেতনে ছাত্রদের পড়াচ্ছি। স্কুল থেকে আমাদের যাতায়াত খরচও দেওয়া হয় না।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা মল্লিক, সহসভাপতি মোর্শেদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম আববাস, যুগ্ম সম্পাদক শারমিন নিরা, কার্যকরী কমিটির সদস্য বিভাষ বাড়ই, রাকিব উদ্দিন, মাসুদ উল হকসহ সংগঠনের ২০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময়ের সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।