ঢাবিতে সাবেক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মার খেলো প্রক্টরিয়াল টিমও

 

হামলার শিকার রানা নাসের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বরত চার প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য। এ ঘটনায় হেনস্তার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রানা নাসের, তার ছোট ভাই বাপ্পী এবং এক ছাত্রী।  সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) কামাল উদ্দীনের নেতৃত্বে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের ফুলার রোড এলাকায় এঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। 

সাবেক শিক্ষার্থীদের মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা। ওই সাবেক শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে প্রক্টরিয়াল টিমের চারজনও মারধরের শিকার হন। পরে তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ বিষয়ে ওই সাবেক শিক্ষার্থী ও প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা বিচার চেয়ে প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী সাবেক শিক্ষার্থী রানা নাসের শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ছোটভাইকে চীনে ভর্তি করানোর বিষয়ে এক বড় আপুর সঙ্গে ফুলার রোডে ব্রিটিশ কাউন্সিলের গেইটের সামনে বসে পরামর্শ করছিলাম। এ সময় রাস্তায় কয়েকজন ছেলে এসে আমার ছোট ভাইকে মারধর করে। পরে আশেপাশের  লোকজন এসে ধাওয়া দিলে তারা চলে যায়। যাওয়ার সময় তাদের একজনকে আটকে রাখি এবং পরিচয় জানতে চাই।

তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষণ পরে দেখি এসএম হলের ভিপির নেতৃত্বে ৫০-৬০জন ছেলে সেখানে আসে। তারা আপুর পরিচয় জানতে চায়। আপু নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এক্স স্টুডেন্ট’ পরিচয় দিলে ভিপি কামাল ‘এক্স’ শব্দটিকে বিকৃত করে গালাগাল করেন। এসময় তারা ফোন কেড়ে নিওয়ার চেষ্টা করে, তাকে হেনস্তা করে। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা আসেন। তারা আমাদের বাঁচাতে গেলে তাদের ওপর তারা হামলা হয়। এতে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা আহত হন। আমরা প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ এবং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রক্টরিয়াল টিমের একাধিক সদস্য জানান, প্রায় সময় তারা দেখেন, কামাল উদ্দিন  ক্যাম্পাসে বহিরাগত বা সাবেক শিক্ষার্থীদের ধরে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা টাকা, মোবাইল ছিনতাই করে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, যা ঘটেছে সেটি দুঃখজনক। ওই শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আর প্রক্টর টিমের সদস্যরাও আহত হয়েছে। তাদের মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিতভাবে দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ডায়েরী হয়েছে কিনা, তা দেখে নিশ্চিত হয়ে জানাব।’ ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত  কামাল উদ্দিনের ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।