আগামী ১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা যদি সময় মতো প্রবেশপত্র না পায় তাহলে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সময় মতো পরীক্ষার্থীরা নিবন্ধন ও প্রবেশপত্র না পেলে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে কোনও ভোগান্তির শিকার না হয় সেই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আগে থেকেই নিতে হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ সোমবার (১৬ মার্চ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রবেশপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবেশপত্র নিয়ে গেছে। দেখা যাক অভিযোগ আসে কিনা। তবে অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করা হবে মন্ত্রণালয়কে।
মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার আগের দিনও প্রবেশপত্র পায়নি অনেক পরীক্ষার্থী। কোনও কোনও শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার দিন কেন্দ্রে প্রবেশপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষাই দিতে পারেনি। শিক্ষকরা টাকার বিনিময়েও পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র নিতে বাধ্য করেছেন। প্রবেশপত্রের দাবিতে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভও করেছে। তবে এবার এ ধরনের কোনও ঘটনার অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডগুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেরিতে প্রবেশপত্র দেওয়া হয় টাকার জন্য। এমনকি প্রবেশপত্র আটকে রেখে টাকা আদায় করা হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার আগের দিন। আবার উদাসীনতার কারণে শিক্ষা বোর্ডের কাছ থেকে প্রবেশপত্র না নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের শো-কজ করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
টাকার বিনিময়ে এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে বাধ্য করা ১০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল ঢাকা শহরের শ্যামপুর এলাকার ভাষা প্রদীপ বিদ্যালয়, পল্লবীর মিরপুর উদয়ন স্কুল, মিরপুরের পাইকপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকার ধামরাইয়ের যাদবপুর বি এম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার ধুমকেতু হাইস্কুল, একই এলাকার পাগাড় মোহাম্মদ আলী পাঠান হাইস্কুল, গাজীপুরের শ্রীপুরের ধনুয়া আদর্শ হাইস্কুল, টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার বাথুলী হাইস্কুল, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার হরিরামপুর হাইস্কুল এবং কিশোরগঞ্জের কাটিয়াদী উপজেলা হাজী শামসুদ্দিন হাইস্কুল।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ব্যাপক অনিয়ম দেখা গিয়েছিল। পরীক্ষা শুরুর আগের দিন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বোর্ডের বিধি বহির্ভূত চাপ প্রয়োগ করে প্রবেশপত্র নিতে বাধ্য করতে চেষ্টা চালানো হয়েছে, যা পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালা পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।