শিক্ষা খাতে বাজেটের ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি

download২০২০-২০২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ন্যূনতম ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে 'গণসাক্ষরতা অভিযান' নামের একটি সংগঠন। পাশাপাশি বাজেট ব্যবস্থাপনায় অর্থ ব্যয়ের সক্ষমতা বাড়ানো এবং অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (২ জুন) অর্থমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এই দাবি তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী।

জাতীয় বাজেটের ১৫ শতাংশ শিক্ষার জন্য বরাদ্দ রাখার দাবি জানিয়ে স্মারক লিপিতে বলা হয়, বিগত দুই দশকে শিক্ষায় আমাদের অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখার জন্য ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেটকে সামনে রেখে এখনই একটি শিক্ষা পুনরুদ্ধার কার্যক্রম হাতে নেওয়া প্রয়োজন। মুজিব শতবর্ষ উদযাপন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০, রূপকল্প-২০৪১, ডেল্টা প্লান-২১০০ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখতে শিক্ষা খাতে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা, গ্রাম-শহর, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম জোরদার করা, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০১১, নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষানীতি-২০১৬ বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এবারের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, করোনার সরাসরি প্রভাবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রেণিকক্ষ-ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সরকার এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট-ভিত্তিক শিক্ষাকর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও এই মাধ্যমে এখনও সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

শিক্ষা পুনরুদ্ধারে বিশেষ পরিকল্পনা তুলে ধরে এতে বলা হয়, করোনা ঝুঁকি প্রশমন ও এডুকেশন রিকভারি কার্যক্রমের আওতায় বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ কমপক্ষে দুই-তিন বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। ওই বিশেষ পরিকল্পনায় পাঠদান, শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আশ্বস্ত করা, অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো বাদ দেওয়া এবং পাঠদানের রুটিন সমন্বয় করা প্রয়োজন।

তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার তুলে ধরে স্বারকলিপিতে বলা হয়, আগামী দিনের শিক্ষা হবে তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর। এ জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যালয় পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত জরুরি। তাই এ খাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ আবশ্যক। এছাড়া শিক্ষক প্রশিক্ষণ মনিটরিংয়ের জন্য আইসিটির ব্যবহারে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিতে বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন।

স্মারকলিপিতে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে আন্তঃপ্রতিষ্ঠান সমন্বয়, শিক্ষকদের সহায়তা ও প্রণোদনা, স্থানীয় পরিকল্পনা ও জন অংশগ্রহণ, সামাজিক সুরক্ষা, শিক্ষা গবেষণার প্রসার, বাজেট বরাদ্দ ও বাজেট ব্যবহারের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার, ন্যূনতম শিখন ফল অর্জনে বিশেষ উদ্যোগ এবং সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়।