বেতন-ভাতা বাবদ ৪ লাখ টাকা বেশি নিয়েছেন শিক্ষা ক্যাডারের সেই আলোচিত কর্মকর্তা

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সাময়িক বরখাস্ত বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) প্রভাষক মো. আব্দুর রাজ্জাক বেতন-ভাতা বাবদ অতিরিক্ত ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮৯৪ টাকা নিয়েছেন। এই অর্থ তার বেতন থেকে সমন্বয় করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে পত্র দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারের কার্যালয়।

সম্প্রতি পাঠানো ওই চিঠিতে জানানো হয়, আলোচিত সরকারি ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রকল্পের সাবেক গবেষণা কর্মকর্তা থাকাকালে সেলফ-ড্রয়িং কর্মকর্তা হিসেবে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত অতিরিক্ত এই টাকা উত্তোলন করেন তিনি।
এর আগেও ‘পদে যোগদান না করেই স্কুল প্রকল্প থেকে খোরপোষ তুলেছেন আব্দুর রাজ্জাক’ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার সাবরিন চৌধুরী স্বাক্ষরিত সম্প্রতি পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং পরবর্তীতে ওএসডি আদেশাধীন গবেষণা কর্মকর্তা (প্রভাষক) মো. আব্দুর রাজ্জাকের কর্মস্থল ও বেতন-ভাতাদি উত্তোলন দফতর নির্ধারণের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে সিদ্ধান্ত চেয়ে লিখিত চিঠির একটি অবহিতকরণ চিঠি পাঠানো হলেও এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য এ দফতরে পাওয়া যায়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, মো. আব্দুর রাজ্জাকের নামে ভিন্ন একটি ব্যাংক হিসাবে ইএফটি করা দুই মাসের খোরপোষ ভাতা এবং বৈশাখী ভাতার অংশ ব্যাংক হিসাবের অস্তিত্ব না থাকায় তা ফেরত আসে। ওই টাকা আবার তার প্রকৃত ব্যাংক হিসাবে ইএফটি করা হয়।

উল্লেখ্য, যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক ভূতাপেক্ষভাবে ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত হন। বরখাস্ত থাকাকালে সেলফ ড্রয়িং কর্মকর্তা হিসেবে তিনি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৪ লাখ ১৫ হাজার ৮৯৪ টাকা বেতনভাতাদি বাবদ অতিরিক্ত উত্তোলন করেছেন। যা আদায় বা সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারের চিঠির পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্র স্বাক্ষরিত ফলোয়াপ চিঠি পাঠানো হয় অধিদফতরের মহাপরিচালককে। এই চিঠিতে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্ত প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে যোগদান সাপেক্ষে খোরপোষ ভাতা গ্রহণ করবেন। সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালে যদি তিনি বিধি বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করে থাকেন তাহলে গৃহীত অর্থ ফেরত বা সমন্বয়যোগ্য হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের তথ্যে দেখা গেছে, এই কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হলেও দীর্ঘদিন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে যোগদান করেননি তিনি। অবশেষে গত ২০ জানুয়ারি অধিদফতরে যোগদান সাপেক্ষে খোরপোষ ভাতা প্রদানের চিঠি দিলো মন্ত্রণালয়।

চিফ অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসারের চিঠির সূত্রে জানা গেছে, প্রভাষক আব্দুর রাজ্জাক চাকরি এখনও স্থায়ী হয়নি। অথচ অধিদফতরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছেন তিনি।