কওমি মাদ্রাসা রাজনীতিমুক্ত রাখার ঘোষণা

কওমি মাদ্রাসারা ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে- এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারিভাবে স্বীকৃত কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি’আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ। রবিবার (২৫ এপ্রিল) যাত্রাবাড়ীতে সংস্থাটির চেয়ারম্যানের জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া মাদ্রাসায় স্থায়ী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় ৬টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

১। কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবে একমাত্র আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন কোন বোর্ড কিংবা কোন সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ব্যতীত পৃথকভাবে কওমি মাদ্রাসা বিষয়ক কোনও সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে না।

২। কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে।

৩। আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদ্রাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তদারকির জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন ৫ বোর্ডের ৫ (পাঁচ) জন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে ৫ জন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত ৫ (পাঁচ) জন সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।

৪। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদ্রাসার যেসব নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লিদের গ্রেফতার করা হয়েছে; সরকারের নিকট তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো হয়।

৫। ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়ার জন্য এবং রমজানের পর কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়।

৬। আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সদস্যরা হলেন: মুফতি রুহুল আমীন, মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মুফতি জসীমুদ্দীন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়ার চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান। হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান মুফতি ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্বমানবতার জন্য দোয়া করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বেফাকের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন, বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গার সভাপতি মুফতি রুহুল আমীন, মহাসচিব মাওলানা শামসুল হক, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিসের প্রতিনিধি মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, আযাদ দীনি এদারায়ে তা’লিমের প্রতিনিধি মাওলানা এনামুল হক, মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর, তানজীমুল মাদারিসের সভাপতি মাওলানা মুফতি আরশাদ রাহমানী, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস, জাতীয় দীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মহাসচিব মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী।