কপি করলে অ্যাসাইনমেন্ট বাতিল

চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি সমমান শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইমেন্ট কপি করে জমা দিলে সংশ্লিষ্ট শ্রেণিশিক্ষক তা প্রথমে ফেরত দেবেন। নতুন করে আবার অ্যসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে পরীক্ষার্থীকে। এরপরও কপি করে জমা দিলে ওই শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট বাতিল হবে এবং পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অ্যধ্যাপক ড. মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘একজন শিক্ষক মূল্যায়ন করলেও অন্য শিক্ষক দিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। কোনও শিক্ষক মূল্যায়নে অবহেলা বা অনৈতিক কাজ করলে সে ক্ষেত্রে তার ব্যবস্থা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার তাই শিক্ষকদেরও মূল্যায়নের সময় এসেছে। শিক্ষকরা এই ক্রান্তিকালে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে লাভবান হবেন। সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলো গ্রহণযোগ্যতা পাবে। ফরমাল পরীক্ষায় প্রকৃত মূল্যায়ন হয় না। শিক্ষকরাই তাদের শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারেন। সুতরাং তারা নিজেদের মর্যাদার কথা চিন্তা করেই এ কাজে আন্তরিক হবেন বলে আশা করি।’

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এসএসসি ও সমমানের ৬০ দিন এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের জন্য ৮৪ দিনের পুনর্বিন্যাস করা পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করেছে। সেই অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় অ্যসাইনমেন্ট পাঠানো হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর এবং মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষাপ্রাতষ্ঠানগুলোয় পাঠায়। অ্যাসাইনমেন্টগুলোয় রুব্রিক্স বা মূল্যায়ন নির্দেশিকাও রয়েছে শিক্ষকদের জন্য। 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। সব প্রস্তুতিও সম্পন্ন। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে এলে কিংবা শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হলে অথবা সংক্রমণ পাঁচ শতাংশের নিচে এলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে এবং পরীক্ষাও নেওয়া হবে। বিষয় ও নম্বর কমিয়ে এসএসসি পরীক্ষা নভেম্বরে এবং এইচএসসি নেওয়া হবে ডিসেম্বরে।

এ বছর পরীক্ষা নেওয়া হবে শুধু গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিনটি বিষয়ে। বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীসহ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ গ্রুপের তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে। আবশ্যিক বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে না। গ্রুপভিত্তিক যেসব বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে সেসব বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে।

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, আইসিটি ও ধর্ম বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে না। আর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা দিতে হবে না। চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষাও দিতে হবে না শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আবশ্যিক বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নম্বর দেওয়া হবে। যদি কোনও কারণে পরীক্ষা না নেওয়া যায় তবে অ্যাসইনমেন্ট মূল্যায়ন করে নম্বর দেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, প্রতিবছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হয় ফেব্রুয়ারিতে এবং এইসএসসি হয় এপিলে। কিন্তু করোনার কারণে ২০২১ সালের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হলে ওই বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দফায় দফায় তা বাড়ানো হয়। সর্বশেষ এ বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।