‘বাংলা-ইংরেজির সঙ্গে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা শিক্ষায়ও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে’

বাংলা ও ইংরেজির পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিকগোষ্ঠীগুলোর ভাষা শিক্ষায়ও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এর সেন্টার ফর ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ ও ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগ আয়োজিত ‘এনটেঙ্গলড ইংলিশেজ ইন ট্র্যান্সলোকাল স্পেসেস’ শীর্ষক তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আলোচনায় তিনি এ কথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ইংরেজির সঙ্গে আমাদের বসবাস দীর্ঘদিনের। যদিও ইংরেজি এক সময় উপনিবেশিক প্রভুদের শাসনের হাতিয়ার ছিল, কিন্তু সময় পরিক্রমায় এটি এখন বৈশ্বিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। যেহেতু সারাবিশ্বের ভাষা শেখার সুযোগ নেই, সেহেতু আমরা ইংরেজিকে বৈশ্বিক ভাষা হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। যেটি আমাদের বিশ্বের বৃহত্তর গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ সাধনে সাহায্য করতে পারে।’

দীপু মনি বলেন, ‘পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী জোরপূর্বক আমাদের মাতৃভাষা বাংলার কণ্ঠরোধ করতে চেয়েছিল। আমরা পাকিস্তানের সে প্রচেষ্টা সফল হতে দেইনি। আমরা মাতৃভাষার অধিকার আদায়ে সফল হয়েছি এবং এই সফলতার ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন সারাবিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে এবং এই দিবসের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষা।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা সেই জাতি যারা ভাষা শিক্ষা, ভাষা সংরক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক জীবনে ভাষার গুরুত্ব বুঝতে পারি। বর্তমানে আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং একইসঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলা, ইংরেজি ও স্থানীয় নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীগুলোর ভাষা শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’

শিক্ষামন্ত্রী এই সম্মেলনকে একটি সময়োপযোগী আয়োজন হিসেবে অভিহিত করে ইউল্যাব কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান। সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ইউল্যাবের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সামসাদ মর্তূজা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যলয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ইউল্যাবের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, এমপি। উদ্বোধনী দিবসের মূল আলোচক ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, সিডনির এমিরেটাস প্রফেসর অ্যালেসটার পেনিকুক। ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাদিয়া রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

তিন দিনে মোট ৭০টি সেশন পরিচালিত হবে এ সম্মেলনে। অনলাইন প্লাটফর্মে আয়োজিত এ সম্মেলনে সারাবিশ্ব থেকে বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও শিক্ষকবৃন্দ যোগদান করবেন। এই সম্মেলনের আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন সেন্টার ফর ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ অ্যাডভাইজার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়লা সুলতানা। কার্যনির্বাহী পরিষদের দায়িত্বে আছেন ইংলিশ অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক আরিফা গনি রহমান।