ভেতরে পরীক্ষা দিচ্ছেন প্রিয় সন্তান। বাইরে ফুটপাতে বসে অপেক্ষা করছেন বাবা-মা। কেউ তাসবিহ জপছেন, আবার কেউ ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করছেন। একটা অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে তাদের মনে। করোনা মহামারির মধ্যে নতুন ভ্যারিয়েন্ট আর নতুন সিলেবাসসহ নানা কারণে তাদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের সামনে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের এমন অভিব্যক্তির কথা জানা গেছে।
সারাদেশে আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর কেন্দ্রগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখা গেছে। তবে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব চোখে পড়েনি।
সন্তানরা এখনও করোনার টিকা নেয়নি, তাই অভিভাবকদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। তাছাড়া এরই মধ্যে নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন দেখা দিয়েছে। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে কী ধরনের পরীক্ষা হবে তা নিয়েও চিন্তিত তারা।
সকালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের সামনে দেখা গেছে, ফুটপাতজুড়ে বহু অভিভাবক বসে আছেন, তাদের হাতে তজবিহ, কোরআন শরিফসহ নানা ধর্মীয় গ্রন্থ। সবাই বসে সন্তানের জন্য দোয়া করছেন।
জানতে চাইলে ভিকারুননিসা স্কুলের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের মা সামছুন্নাহার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মেয়ের জীবনে প্রথম কোনও বড় পরীক্ষা শুরু হয়েছে। অনেক শঙ্কা আর আতঙ্কে আছি। করোনা তো আছেই। অন্যদিকে নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া নতুন সিলেবাস। কী থেকে কী হয় বুঝতে পারছি না। মেয়ে কি এসবের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট হতে পারবে।’
একই শঙ্কা নাহিদা নূরের মায়ের। হাতে তসবিহ নিয়ে স্কুলের গেটে বসে জিকির করছেন তিনি। জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সন্তানের জন্য দোয়া করছি। সে পরীক্ষা দিচ্ছে। আল্লাহ যেন তাকে মহামারি থেকে রক্ষা করেন। আর পরীক্ষাটা যেন সহজ করে দেন।’
পরীক্ষার্থী নাসরিন আক্তারের বাবা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘মেয়েকে এখনও টিকা দিতে পারিনি। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট যেভাবে বাড়ছে, তাতে শঙ্কিত আছি। সব মিলিয়ে তারা যেন ভালোভাবে পরীক্ষাটা শেষ করতে পারে সেই কামনা করছি।’