শিক্ষার্থী ভর্তিতে সরকারের নির্দেশ মানছে না হলিক্রস

মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণের সুযোগ নেই। কিন্তু রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলিক্রস ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ১০ থেকে ১১ বছর নির্ধারণ করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভর্তির শর্তে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিতে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত বয়স হতে হবে ১০ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। অথচ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সর্বনিম্ন বয়স ৬ বছরের অধিক হতে হবে। সেই হিসাবে পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর একজন শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স দাঁড়ায় ১১ বছরের বেশি। অথচ ১১ বছরের বেশি বয়স হলে ভর্তি হওয়া যাবে না হলিক্রসে। শিক্ষার্থীদের ভর্তির বয়স সংক্রান্ত এই সরকারি নির্দেশনা মানছে না প্রতিষ্ঠানটি।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘প্রথম শ্রেণিতে সর্বনিম্ন বয়স ৬ বছর। ভর্তি হতে পারবে ৬ প্লাস বয়স থেকে। সেই হিসেবে সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা থাকলেও সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করার সুযোগ নেই। কারণ, কোনও শিক্ষার্থীর যেকোনও কারণে এক বছর সময় নষ্ট হতে পারে। আমরা কোনও শিক্ষার্থীকে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করতে পারি না।’

হলিক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ভর্তির শর্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, ‘হলিক্রস হয়তো ভুল করেছে। এমনটি হওয়ার কথা নয়। ’ 

এদিকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলছেন, হলিক্রস আগে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী বাছাই করছে। বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের মধ্যে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের কোনও নির্দেশনা মানা হচ্ছে না এখানে।

এ বিষয়ে জানতে হলিক্রসের অধ্যক্ষ শিখা গোমেজকে বারবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। মেসেজ দেওয়া হলেও কোনও জবাব দেননি।

সম্প্রতি ২০২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষা ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে ভর্তি শর্তে জানানো হয়, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সর্বনিম্ন বয়স হতে হবে ৬ প্লাস। তবে সর্বোচ্চ কত বছর বয়স পর্যন্ত ভর্তি হওয়া যাবে সে বিষয়ে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কারণ, কোনও শিশু নির্ধারিত বয়সের কিছু পরও বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। দুর্ঘটনা ও অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে সামান্য কিছু বেশি বয়সেও লেখাপড়া শুরু করতে পারে। সেই কারণে সাত বা আট বছর বয়সেও একজন শিশু ভর্তি হতে পারে। আর সে কারণেই সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়নি।

ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ভর্তি হবে অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে। পরীক্ষা ছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। তবে নতুন সরকারি হওয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করা হয়েছে।  তারা উপজেলা কমিটির মাধ্যমে লটারি করে শিক্ষার্থী ভর্তি করাবে।

সর্বশেষ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) অনলাইনে ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ানো হয়। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি সময় শেষ হয় ১০ ডিসেম্বর। বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৬ ডিসেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তির আবেদন করা যাবে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ডিসেম্বর এবং বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে ১৯ ডিসেম্বর।