শিগগিরই দেশের মানসম্পন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকালে এটিএন নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক বৈঠকিতে এ কথা জানান তিনি। ‘উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক এই বৈঠকির আয়োজন করে অনলাইন পত্রিকা বাংলা ট্রিবিউন ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাব।
এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বৈঠকিতে আরও অংশ নেন—ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, সহযোগী অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি)-এর পরিচালক ড. সামিয়া সেলিম, বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম আববাস
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমি অবশ্যই একমত যে পিএইচডি স্কলার ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হতে পারে না। পিএইচডি গবেষণা হচ্ছে মৌলিক এবং ইনটেনসিভ। আপনারা কিছু দিনের মধ্যে জানতে পারবেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অনুমতি পেয়েছে।
ইউজিসির এই সদস্য বলেন, ‘বর্তমানে পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আলাদা করে দেখছি না, বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই দেখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় মানেই হচ্ছে নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও বিতরণ। আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্যই এতসব আয়োজন। বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১০৮টি এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ৫২টি। আরও দুটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে পাবলিকও না, প্রাইভেটও না। বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ব্যত্যয় ঘটাচ্ছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরছে না।’
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অনুমতির বিষয়ে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, ‘পিএইচডি ডিগ্রি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুপারভাইজারকে অতিক্রম করতে হবে একজন গবেষককে। সুপারভাইজার যে বিষয়টি জানেন, সেটি দিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি হবে না। আমি (সুপারভাইজার) যেটি জানি না, পিএইচডি স্কলারকে সেটি বলতে হবে তার গবেষণায়। সেই লেভেলে একজন পিএইচডি স্কলারকে নিয়ে যেতে হলে গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। গবেষণার কালচার তৈরি করতে হবে। নিয়মিত গবেষণার পরিবেশ প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের যারা গাইড করতে পারবেন, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আনতে হবে। সবকিছু মিলে ইউজিসি এখনও কনভিন্সড না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অনুমতি দিলে সঙ্গে সঙ্গে যে অজুহাত আমরা অনুভব করছি বা দেখতে পাচ্ছি, তাতে সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে হবে কিনা? কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের গবেষণা ও শিক্ষার সুযোগ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনও রেসট্রিকশন দেওয়া যাবে না। বরং যদি কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটায় আমি তাকে ধরবো। সংকটের কথা চিন্তা করে কেন সম্ভাবনা বন্ধ করবো। আমরা ইউজিসির সবাই মিলে চেষ্টা করছি।’
অধ্যাপক আলমগীর বলেন, ‘আমরা এখন চিন্তা করছি—আপনারা কিছু দিনের মধ্যে জানতে পারবেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার অনুমিত পেয়েছে। এ জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথম দিকে (র্যাংকিংয়ে) যেসব বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তারা যদি আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট একটি প্রস্তাব দেয়, তাহলে যেমন- এই হচ্ছে আমার সাবজেক্ট, এই হচ্ছে পিএইচডি স্কলার, এই হচ্ছে আমার ফ্যাকাল্টি মেম্বার্স। তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গাইড করতে পারবো। তাহলে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে পিএইচডি করতে পারবো। পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার জন্য তাদের একটি অর্ডিন্যান্স তৈরি করতে হবে। সেই অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কাজ করতে হবে। আমি অবশ্যই একমত যে পিএইডি স্কলার ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হতে পারে না। পিএইচডি গবেষণা হচ্ছে মৌলিক এবং ইনটেনসিভ।’