বাংলা ট্রিবিউন- ইউল্যাব বৈঠকি

‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিজের চেষ্টায় গবেষণা খাতে বেশি ব্যয় করছে’

দেশের প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের প্রচেষ্টায় গবেষণা খাতে বেশি অর্থ ব্যয় করছে বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান। মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকালে এটিএন নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচারিত এক বৈঠকিতে এ কথা জানান তিনি।  ‘উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক এই বৈঠকির আয়োজন করে অনলাইন পত্রিকা বাংলা ট্রিবিউন ও ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাব।

এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী সম্পাদক মুন্নী সাহার সঞ্চালনায় বৈঠকিতে আরও অংশ নেন—ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান, সহযোগী অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি)-এর পরিচালক  ড. সামিয়া সেলিম, বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার এস এম আববাস।

গবেষণায় ফান্ড নিয়ে অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়  শূন্য থেকে শুরু করেছে। তাদের কোনও ফান্ড ছিল না। দেশের প্রথম সারির ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ভালোভাবে বুঝেছে যে যদি ভালো গবেষণা না হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় এগুবে না। ভালো লেখাপড়া না হলে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতো না। উচ্চ শিক্ষার্থীদের মোট ৬২ শতাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। খারাপ হলে অভিভাবকরা ছেলেমেয়েদের পাঠাতো না।

ইমরান রহমান বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেপুটেশন নির্ভর করে তাদের গবেষণার ওপর। গবেষণা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হতে হবে। সেখানে আমরা (বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়) পিছিয়ে আছি। কারণের মধ্যে দুটো গুরুত্বপূর্ণ। একটি ফান্ডিং। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৬ কোটি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই কোটির কিছু বেশি গবেষণা খাতে বরাদ্দ। যা রাজস্ব বাজেটের ১ শতাংশ। সরকার থেকে আমরা কোনও ফান্ড পাই না। অথচ ইউল্যাবের মতো ছোট একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও ৫০ শতাংশ গবেষণা খাতে ব্যয় করছে। অন্য ভালো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এই রকম বা কাছাকাছি আছে। এর কারণ হচ্ছে— আমরা উপলব্ধি করি গবেষণা যদি না হয়, গ্লোবালি যদি আমরা রিকগনাইজড না হই, তাহলে আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন চলে আসে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেন, বেসরকারি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিএইচডি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। পিএইচডি ছাড়া গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করতেই পারে না।

তিনি আরও বলেন, ইউল্যাব জার্মানি, নেদারল্যান্ড, ইন্ডিয়া ও ইউকেসহ বিভিন্ন দেশেই গবেষণা করেছে। বিদেশিরা তো খামাখা আমাদের টাকা দেবে না। কিন্তু আমরা যখন বিদেশ থেকে টাকা আনতে চাই তাহলে যদি গ্রান্ট শব্দটি লেখা থাকে তাহলে টাকা পেতে প্রায় এক বছর সময় লাগে।  কারণ এটা যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে, এনজিও ব্যুরোসহ বিভিন্ন জায়গায়। আমাদের এনজিও ফান্ডের মতো দেখা হয়। সে কারণে দেরি হয় ফান্ড পেতে। তাছাড়া বড় বড় কোম্পানির কাছে যদি যাই ফান্ড আনতে তাহলে ট্যাক্স ফ্রি করতে হবে, বিদেশে ট্যাক্স ফ্রি করা হয়। সেটাও যদি করা তো তাও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজের মতো করে গবেষণার জন্য ফান্ড সংগ্রহ করতে পারে।

ইউল্যাবের সহযোগী অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (সিএসডি)-এর পরিচালক  ড. সামিয়া সেলিম বলেন, পিএইচডি গুরুত্বপূর্ণ কারণ— বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, সামাজিক চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করা শিক্ষার্থীদের সেভাবে দক্ষতা তৈরি করা  এবং শিক্ষার উন্নয়ন করতে হলে গবেষণা করতে হয়।