ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে ইউজিসি

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ’র বিরুদ্ধে আত্মীয়-স্বজন নিয়োগের অভিযোগসহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তদন্তে নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি।   সম্প্রতি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ এই তদন্ত কমিটির প্রধান।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শেষ পর্যায়ে। শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।’

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় তুলে ধরে গত বছরের নভেম্বরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর অভিযোগ করে চিঠি দেন আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মো. হাসানুল ইসলাম।

আরেক সিন্ডিকেট সদস্যের বরাত দিয়ে হাসানুল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকরি স্থায়ীকরণের বিষয়টি সভায় এজেন্ডাভুক্ত করা হয়, কিন্তু এ নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। নিয়োগে কোনও মেধা তালিকা মানা হয়নি। মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থাকা অনেকের নাম তালিকার নিচের দিকে রাখা হয়েছে।

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্যের সন্তান এ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পেয়েছেন। কারও কারও ছেলে, মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনও চাকরি পেয়েছেন। সিন্ডিকেটের কতিপয় সদস্যের যোগসাজশে উপাচার্য নিয়োগ ও চাকরি স্থায়ী করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা অবৈধ।

অপরদিকে ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর উপাচার্যের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে শিশু নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ স্বাধীনতা মাদ্রাসা শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক মো. আজমল হোসেন। তিনি তার অভিযোগে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে অমান্য ও প্রত্যক্ষ যাচাই-বাছাই ছাড়াই করোনার মাঝে উপাচার্য প্রায় দেড়শ’ নতুন প্রতিষ্ঠান (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) অনুমোদন দিয়েছেন, তাদের নিজেদের তৈরি করা অ্যাকাডেমিক ও অধিভূক্ত কমিটিকে দিয়ে। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে ন্যূনতম দুই লাখ থেকে চার লাখ টাকা করে লেনদেন হয়েছে।

অভিযোগে তিনি আরও জানান, ভিসির চারিত্রিক স্খলন ও দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়কে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে যৌন কেলেংকারীর কারণে তিনি এখন সবার হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে অনেকেই।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বৃহস্পতিবার বিকালে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহকে একাধিকবার মোবাইলে কল করে এবং মেসেজ পাঠিয়েও তার কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে যোগদান করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হলে সরকার দ্বিতীয় দফায় তাকে নিয়োগ দেয়। দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ’র বিরুদ্ধে একের পর এক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।