প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে না পেরে মাউশি সচিবের ক্ষোভ

প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তিন শিক্ষক জেলে, একজন পলাতক, আমরা কাকে বিশ্বাস করবো— বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক।

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় কেন্দ্র সচিবসহ তিন শিক্ষকের গ্রেফতার প্রসঙ্গে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় তিনি এ কথা করেন।

জাতীয় শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন কৌশল পরিকল্পনা কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অংশীজনের সঙ্গে দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব বলেন, ‘আমরা একটা কঠিন সময়ের মধ্যে আছি। আজ শুদ্ধাচার নিয়ে কথা বলছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গেছে। পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। দুর্ভাগ্য আমাদের শিক্ষককে অ্যারেস্ট না করে পারিনি। এই লজ্জা নিয়ে আমরা আজ এখানে কর্মশালা করছি। তিনজন শিক্ষক জেলে, একজন পলাতক। আমি কার ওপর বিশ্বাস করবো। প্রশ্নপ্রত্র আনা নেওয়ার দায়িত্ব যার ওপর দিলাম, শুনলাম উনি বেশভূষায় ইসলামিক মানুষ। কোথায় বিশ্বাস রাখবো? ছাত্ররা কী শিখবে? শিক্ষকদের তো আমরা শাসন করতে পারি না। আমাদের একটা জাগরণ দরকার।

আবু বকর ছিদ্দীক বলেন, শুদ্ধাচার হলো— গুড গভর্নেন্সের একটি টুল। আমরা যদি সুশাসন নিশ্চিত করতে চাই, তাহলে নিজেদের আচরণ শুদ্ধ হতে হবে হবে।

আমাদের দরকার ভালো অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম। কয়জন টিচারের কোয়ালিটি আছে— প্রশ্ন করে সচিব বলেন, সেসিপে আছে গবেষণা কর্মকর্তা, ওনাদের কী গবেষণা কোয়ালিটি আছে? রিসার্চ ম্যাথডোলজি কী জিনিস জানেন? তাহলে ওনি কী গবেষণা করবেন? আমাদের ৪১ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এছাড়া অন্যান্য কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। তাদের কোয়ালিটি সঠিক আছে কিনা? আমরা এখন কোয়ালিটি ফ্রেমওয়ার্ক করছি। নানান কিছু করে টাকা ও কাগজ নষ্ট করছি। কিন্তু বাঁশি যে বাজাবে, তাকে বাঁশি বাজানো শেখাচ্ছি না। তাকে শেখাচ্ছি— বাঁশি লম্বা কতটুকু, বাঁশির ছিদ্র কয়টা, বাঁশি দেখতে কেমন এসব। বাঁশি বাজানো প্র্যাক্টিস ছাড়া কেউ শিখতে পারে না। এটা কিন্তু করাচ্ছি না। কেউ কেউ বলছেন, মেধাবীরা শিক্ষকতায় আকৃষ্ট হচ্ছে না। কীসের প্রতি আকৃষ্ট হবে, কোথায় আকৃষ্ট হবে? এগুলো আমাদের খেয়াল করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার,  মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও অংশীজনরা উপস্থিত ছিলেন।