অন্তর্দৃষ্টি তৈরি না হলে গবেষণা বইয়ের বাইন্ডিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে

গবেষকের অন্তর্দৃষ্টি তৈরি না হলে গবেষণা একটি বইয়ের বাইন্ডিংয়ে সীমাবদ্ধ থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান।

রবিবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিএ, এমএএস, এমফিল, এমফিল লিডিং টু পিএইচডি ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হওয়া গবেষকদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপাচার্য বলেন, ‘গবেষককে নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য সত্যানুসন্ধান করতে হবে। অনুসন্ধানের বাস্তব ক্ষেত্রগুলোতে বিচরণ করতে হবে। অনাবিষ্কৃত বিষয়ে গবেষণার চোখ নিবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। অন্যান্য পেশাজীবীর কাজের সঙ্গে গবেষণার কোনও পার্থক্য থাকবে না। অন্যান্য পেশায় ভাবাবেগ থাকতে পারে, পক্ষপাতিত্ব থাকতে পারে। কিন্তু গবেষণায় এর কিছুই থাকবে না। ক্রমাগত অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে গবেষক সত্য তুলে আনবে। বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানই গবেষকের মূল লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন। কারণ একজন গবেষককে নির্মোহভাবে গবেষণা কার্যক্রম চালাতে হয়। গবেষণায় কোনও পক্ষপাতিত্বের স্থান নেই।

নতুন গবেষকদের বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘একটি বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে গবেষণার বিকল্প নেই। তাই একজন গবেষক ভাবাবেগ দ্বারা পরিচালিত হবে না। বরং বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে সে পরিচালিত হবে। কোনও দল-মত-পক্ষ নয়, প্রযুক্তির পক্ষে, বিজ্ঞানের পক্ষে, অনুসন্ধানের পক্ষে, সত্যের পক্ষে প্রগাঢ় যে জায়গাগুলো সেখানে গবেষকের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। একজন প্রকৃত গবেষককে অনেকের কাছে অনেক সময় অপ্রিয় হতে হয়। কারণ গবেষককে সত্যানুসন্ধান, প্রকৃত বাস্তব অনুসন্ধানের যে ক্ষেত্রগুলোয় বিচরণ করতে হয়, তার সঙ্গে রয়েছে জ্ঞানের নিবিড় সম্পর্ক।

উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা যে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছি এর আমূল পরিবর্তন চাই। আর আমূল পরিবর্তনের মূল হাতিয়ার হলো অহর্নিশ পরিশ্রম করা। আমূল পরিবর্তনের প্রধান শর্ত ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়াকে উপেক্ষা করে সমাজের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা। আত্মোৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমুখী সমাজ বিনির্মাণই আমাদের মূল লক্ষ্য।’

ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিএ, এমএএস, এমফিল, এমফিল লিডিং টু পিএইচডি ও পিএইচডি কোর্সে ১০০ জন গবেষক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য স্থপতি অধ্যাপক ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ ও ট্রেজারার অধ্যাপক আবদুস সালাম হাওলাদার। এতে সভাপতিত্ব করেন স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন– স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মনিরুজামান শাহীন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামানসহ বিভিন্ন দফতরের বিভাগীয় প্রধানরা।