১০ স্কুল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালককে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি

‘ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রকল্প’ পরিচালকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রকল্পে দুর্নীতি হয়নি বলা হলেও সাবেক প্রকল্প পরিচালক (পিডি) এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের একজন সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চালু করা হয়েছিল। তবে দুই দফা তদন্তের পর এই দুই কর্মকর্তাদের বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীকের সই করা অফিস আদেশে প্রকল্প পরিচালক সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক  ড. আমিরুল ইসলামকে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।  

এর আগে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) দিল আফরোজ বিনতে অছিরের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতি না পাওয়ায় তাকেও বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। 

অফিস আদেশে বলা হয়, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ‘ঢাকা শহর সন্নিকটবর্তী এলাকায় ১০টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে ভূমি অধিগ্রহণের মূল্য তালিকা যাচাই-বাছাইকালে সম্পূর্ণ দূরভিসন্ধিমূলকভাবে, দুর্নীতির অভিপ্রায়ে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশনের মাধ্যমে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (আরডিপিপি) প্রস্তুত করতে সহায়তা করার অভিযোগে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। ২০২১ সালের ১ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত শুনানিতে তার বক্তব্য সন্তোষজনক না হওয়ায় অভিযোগ তদন্তের জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা প্রতিবেদন মতে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ড. আমিরুল ইসলামকে বিভাগীয় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।’

দশ স্কুল প্রকল্পে ‘৩০০ কোটি টাকা লোপাটের আয়োজন করা হয়েছে’ মর্মে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর ২০২০ সালে তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওই সময়ের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) মো. মোমিনুর রশিদ আমিনকে সভাপতি করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া না গেলেও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘যদিও টাকাটি এখনও খরচ হয়নি বা একেবারে সরকারের আর্থিক কোনও ক্ষতি হয়নি। তবে যেকোনও দুর্নীতির শুরু হয় প্রাক্কলন তৈরির সময় থেকে। অর্থাৎ সঠিকভাবে চিহ্নিত না হলে বা ধরা না পড়লে এই টাকা যেকোনও চ্যানেলে সময়ের পরিক্রমায় সিন্ডিকেট কর্তৃক আত্মসাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

প্রতিবেদনের এই অংশের কারণে সাবেক প্রকল্প পরিচালক ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের একজন সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছিল।