অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের অনুমোদন না নিয়ে ছাত্র ভর্তির বিজ্ঞপ্তি, শোকজ ইউজিসির

অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন না নিয়েই শিক্ষার্থী ভর্তির উদ্যোগ নিয়েছে মালয়েশিয়ার ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি’র বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইনসাইট ইনস্টিটিউশন অব লার্নিং -এর চেয়ারম্যানকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনের কাছে উপযুক্ত জবাব পাঠাতে বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বুধবার (৩ মে) রাতে ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টি শাখা স্থাপনের অনুমোদন নিয়েছে। কিন্তু অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তারা অ্যাকাডেমিক শিক্ষাক্রম চালানোর জন্য কোনও আবেদনও করেনি। আইনে বলা আছে প্রত্যেকটা প্রোগ্রাম চালু করতে হলে লিখিত দিতে হবে, সিলেবাস দিতে হবে। এরপর লিখিত অনুমোদন নিয়ে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে সেটা তারা করেনি। ইউনিভার্সিটির শাখা ক্যম্পাসের অনুমোদন পাওয়ার পরই তারা ছাত্র ভর্তির করতে সরাসরি অ্যাডভার্টাইজমেন্টে চলে গেছে। অ্যাকডেমিক কার্যক্রমের অনুমোদন তারা নেয়নি। আমরা কিছুই জানি না, অথচ তারা অ্যাডভার্টাইজমেন্ট করে দিয়েছে। ‘

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় শিক্ষার্থীর ভর্তির বিজ্ঞাপন দেওয়ার হয়। বিষয়টি ইউজিসির নজরে আসার পর বুধবার (৩ মে) কারণ দর্শানো নোটিশ করে ইউজিসি। ইউজিসির অফিস আদেশে বলা হয়, ‘বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রতিষ্ঠানের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টার পরিচালনা বিধিমালা, ২০১৪ '-এর বিধি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ ক্যাম্পাস কর্তৃক ব্যত্যয় ঘটেছে বলে কমিশনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ অবস্থায় যথোপযুক্ত জবাব আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে কমিশনের কাছে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করা হলো।

প্রসঙ্গত, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শাখা ক্যাম্পাস স্থাপনের বার বার বিরোধিতা করে আসছিল বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি। সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলেন, ‘দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস করতে দিলে শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করবে। শিক্ষার এই বাণিজিকীকরণ ঠেকাতে আমরা আগেও মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে আবেদন করেছি।’

এর আগে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছিলে, ‘যদি আমাদের উচ্চশিক্ষায় এতোই দৈন্য দেখা দেয়, তাহলে অক্সফোর্ড বা ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নামে শাখা ক্যম্পাস খোলা যেতে পারে। তাহলে কমপেয়ার করা যাবে। তা না করা হয়, তাহলে দেশের উচ্চশিক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ব্যবসা করার সুযোগ তৈরি করা হচ্ছে। স্টাডি সেন্টার করার অনেকটা কোচিং সেন্টারের মতো, এটি আমাদের প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।’