র‌্যাংকিংয়ে ভালো করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা সহায়তা দেবে এলসেভিয়ার

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে কাঙ্ক্ষিত স্থান অর্জনে গবেষণায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বের প্রথম সারির প্রকাশনা সংস্থা এলসেভিয়ার। এছাড়া, প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছে। 

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সঙ্গে তার দফতরে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ আগ্রহ ব্যক্ত করে প্রতিষ্ঠানটি।

সভায় জার্নালস এলসেভিয়ারের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সিনিয়র একাউন্টস ম্যানেজার ফারাহা সিদ্দিকি বাংলাদেশের গবেষণার একটি চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ৫১ হাজার ৩৩৫টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ২০১৮ থেকে এ সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে ১৯ শতাংশ গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ফারাহা সিদ্দিকি বলেন, এসময়ে গুণগত গবেষণা বৃদ্ধির হার মাত্র ২ শতাংশ। এজন্য এলসেভিয়ার দেশের গুণগত গবেষণা উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়।

ফারাহা সিদ্দিকি আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব গবেষণা প্রকাশিত হয় এর মধ্যে ৯০ শতাংশ ইউজিসি’র আওতাধীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে হয়ে থাকে। এসব গবেষণার প্রবন্ধের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কিউ ১ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে তিনি জানান।

বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে গবেষণায় বাংলাদেশের অবস্থান ৫৩ এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ১৩ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে গুণগত গবেষণায় জোর দিতে পারে সেদিকে তারা নিবিড়ভাবে কাজ করতে আগ্রহী।

গুণগত গবেষণা বিষয়ে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুণগত গবেষণায় যেন ভালো করতে পারে সেজন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল বাজেটে ১৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইউজিসি বিভিন্ন গবেষণা বৃত্তি, ফেলোশিপ প্রদান ও নীতিমালা প্রণয়ন করছে। গুণগত গবেষণায় বাংলাদেশ যাতে ভালো করতে পারে সেজন্য বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ‘হায়ার এডুকেশন এক্সিলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন’ এবং এডিবির অর্থায়নে ‘ইম্প্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ দু’টি প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন হলে গুণগত গবেষণায় দেশ এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অধ্যাপক আলমগীর আরও বলেন, বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে নিতে মানসম্পন্ন গবেষণার কোনও বিকল্প নেই। গুণগত শিক্ষা ও মানসম্পন্ন গবেষণার জন্য এলসেভিয়ারের উন্মুক্ত রিসোর্সগুলো ব্যবহার করে গবেষকরা সমৃদ্ধ হবেন এবং গবেষণা ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।

ইউজিসি জানায়, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সহজে ও স্বল্পমূল্যে এলসেভিয়ারের ই-রিসোর্স যাতে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য ইউজিসি শিগগির একটি চুক্তি সম্পন্ন করবে বলে দুপক্ষ সম্মত হয়েছে।

উল্লেখ্য, এলসেভিয়ার প্রতি বছর প্রায় ২ হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে থাকে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা আড়াই লাখেরও বেশি। এর আর্কাইভে ৭০ লাখের অধিক প্রকাশনা রয়েছে।

সভায় ইউজিসি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া এবং এলসেভিয়ারের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সিনিয়র সলিউশন সেলস ম্যানেজার (বুকস) অর্ণব কুমার দে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সভা পরিচালনা করেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এবং ট্রেনিং বিভাগ বিভাগের উপপরিচালক নুসরাত শারিতা।