ইডেন কলেজের উজ্জ্বলতম প্রাক্তন ছাত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নাচগান আলোকসজ্জা ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতিতে আনন্দমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ইডেন মহিলা কলেজের ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান।

শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় সার্ধশতবর্ষ উদযাপন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরাসহ আরও অনেকে।

প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ইডেন কলেজের উজ্জ্বলতম প্রাক্তন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারী শিক্ষায়, নারী ক্ষমতায়নে, নারীদের অগ্রযাত্রায় আজ বাংলাদেশ যে জায়গায় আছে, সে জন্য এই প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য। আমরা শিক্ষাকে সর্বস্তরে বিশ্বমানে উন্নীত করতে চাই। আমরা শেখ হাসিনার হাতেই যুগোপযোগী একটি শিক্ষানীতি পেয়েছি, সেটাকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য পরিকল্পনা করছি।

তিনি আরও বলেন, এই কলেজের যে ইতিহাস ১৮৭৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ এই ১৮ একর জায়গার মধ্যে এসে আজ ইডেন মহিলা কলেজ নামে পরিচিতি পেয়েছে। দেড় শ বছর এরই মধ্যে এই কলেজ পেরিয়ে গিয়েছে এবং এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই এই অঞ্চলের নারীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই পাস করেছেন লীলা নাগ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের মতো নারীরা, যাদের দেখে অনুপ্রাণিত হন এ দেশের নারীরা। কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সানজিদা খাতুনসহ আরও অনেকে।

ইডেন কলেজের ১৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি এসেছেন বহু প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তারা এখানে আসতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত।

প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানান, এমন আয়োজনে আসতে পেরে তারা খুবই খুশি। ইডেন মহিলা কলেজ সব সময়ই তাদের কাছে সেরা এবং একটি আবেগ ও ভালোবাসার জায়গা।

ইডেন মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০০৭-০৮ বর্ষের শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন বলেন, অনেক বছর পর এখানে এলাম। খুবই ভালো লাগছে। অনুষ্ঠানটি অনেক জমকালো হয়েছে। খুব কমই এমন অনুষ্ঠানে আসার সুযোগ হয় আমাদের। ২০১৫ সালের পর এবার এলাম, এটা আসলে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি আসার মতো। আগের চেয়ে ইডেনের তেমন কোনও পরিবর্তন দেখছি না। ভালো লাগছে।

দর্শন বিভাগের ১৯৮৯-৯০ বর্ষের শিক্ষার্থী আসফিয়া রহমান বলেন, ৩০ বছর আগে আমি ইডেন থেকে বের হয়ে গেছি। এখন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। আসার সুযোগ হয় না। তবে আজকের এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। এ ধরনের অনুষ্ঠান বারবার হোক। দীর্ঘদিন পর এখানে আসতে পারাও একটা ভাগ্যের বিষয়। আমি খুবই আনন্দিত। এখন ইডেনের চারপাশে বড় বড় ভবন, হল বেড়েছে, শিক্ষার্থী বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে দারুণ লাগছে।

সার্ধশতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে কলেজের প্রাক্তন ১৮ শিক্ষার্থীকে উত্তরীয় পরিয়ে বিশেষ সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, জাতীয় সংসদের উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, ভাসা সৈনিক সিদ্দিকা জামান, শিক্ষাবিদ ড. সানজিদা খাতুন, এ এন রাশেদা, ড. আয়েশা বেগম, সংগীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমান, শিক্ষাবিদ ফাহমিদা খাতুন, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ফেরদৌসী মজুমদার, দিলারা জামান, ডলি জহুর, মুনিরা ইউসুফ মেমী, বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়লা হাসান, মাহফুজা খানম, বাংলাদেশ তেল গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশনের জিএম ড. ইসমত মির্যা, নজরুল সংগীতশিল্পী ফেরদৌস আরা, ক্রীড়াবিদ নার্গিস আরা এ্যানি ও চিকিৎসক শেহরিন এফ সিদ্দিকা।