দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার জন্য নীতিমালা করছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এই নীতিমালার খসড়া চলতি জুন কিংবা জুলাই মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে। নীতিমালা চূড়ান্ত অনুমোদনের পর দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিএইচডি ডিগ্রির প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে। তবে যেসব শর্তে পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন দেওয়া হবে, তাতে হাতেগোনা কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শুরুতে এই সুযোগ নিতে পারবে।
জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা একটা নীতিমালা করছি, অনগোয়িং। সেটা হয়তো এ মাসে অথবা আগামী মাসের মধ্যেই ফাইনাল হয়ে যাবে আশা করছি।’
দীর্ঘদিন আলোচনার পর ২০২৪ সালের ৪ জুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি প্রোগাম চালু জন্য নীতিমালা প্রণয়নে একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
গত ২২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি) আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা ও ইফতার মাহফিলে জানিয়েছিলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে পিএইচডি কোর্স পরিচালনার লক্ষ্যে গঠিত কমিটি কাজ করছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক একটি উদ্যোগ। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে এ পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা আশা করি, দ্রুততম সময়ে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও অনুমোদনের মাধ্যমে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম হবে।’
সম্প্রতি ইউজিসি জানায়, দ্রুত সময়ের মধ্যে নীতিামালা চূড়ান্ত হবে।
পিএইচডি প্রোগ্রামের অনুমোদন পেতে যেসব শর্ত থাকতে পারে
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি প্রদানের যোগ্যতা ও সক্ষমতা নির্ধারণে একটি মানদণ্ড (ক্রাইটেরিয়া) থাকবে। মানদণ্ড অনুযায়ী যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পাবে।
যোগ্যতার মাপকাঠির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ নবায়ন থাকতে হবে। পিএইচডি গবেষণার জন্য অবকাঠামোসহ প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। প্রোগ্রাম চালু করতে হলে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক থাকতে হবে। পিএইচডি গবেষণার ক্ষেত্রে অন্য স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কো-সুপারভাইজার মনোনয়ন দিতে হবে।
পিএইচডি প্রোগ্রাম চালুর অনুমতি পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন যেমন-তেমনভাবে পিএইচডি ডিগ্রি না করায় সে জন্য একটি বিশেষ নির্দেশিকা থাকবে নীতিমালায়। বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের বিষয়গুলো নির্ধারণ করে দেওয়া হবে পিএইচডি করানোর জন্য।
তবে এসব শর্তের কিছু যেমন বাদ যেতে পারে আবার নতুন কিছু যুক্তও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পিএইচডি ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর অনুমোদন পাওয়ার শর্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘পিএইচডি গবেষণা যারা সুপারভাইজ করবেন তাদের অবশ্যই গ্লোবালি কমপিটেটিভ শিক্ষক হতে হবে। যাদের গবেষণা টপ র্যাকিং জার্নালে প্রকাশিত হয়, তারাই সুপারভাইজার হতে পারবেন। বাংলাদেশের কনটেক্সটে টপ শিক্ষক, যারা ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন। প্রতি বছরই যাদের কিউ ওয়ান জার্নালে গবেষণা প্রকাশিত হয়, অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে কাজ করছেন, তাদের প্রত্যেককে স্থায়ী শিক্ষক হতে হবে, অধ্যাপক ও কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপক থাকতে হবে।’