ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ খুলছে শনিবার 

পাঁচ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ১৮ দিন পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ফের শিক্ষা কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আবাসিক হলগুলোও খুলে দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার (৯ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম।

তিনি জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম আগামী শনিবার (১২ জুলাই) থেকে শুরু হবে। আর মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলগুলো খুলে দেওয়া হবে ১১ জুলাই সকাল ৮টা থেকে।

এর আগে নিরাপদ আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত মে মাস থেকে ক্লাস বর্জন করে আসছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ দাবিতে কলেজ প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জুন থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে দুপুর ১২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গত ২১ জুন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, আজ (২১ জুন) অনুষ্ঠিত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কলেজের চলমান অচলাবস্থা নিরসনের জন্য আগামীকাল (২২ জুন) থেকে কলেজের এমবিবিএস ছাত্র-ছাত্রীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। ছাত্র-ছাত্রীদের আগামীকাল (২২ জুন) দুপুর ১২টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো।

এর আগে গত জুন মাসের শুরু থেকেই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের আবাসিক ও অ্যাকাডেমিক ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিকল্প আবাসন এবং ছাত্রাবাস ও অ্যাকাডেমিক ভবন সংস্কারের দাবিতে গত ২৮ মে থেকে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসা নবীন ব্যাচ ‘কে-৮২’ তাদের সিনিয়র ব্যাচদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানও বর্জন করে।

এরপর ৬ জুন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের আবাসিক হলগুলোতে জীবনের ঝুঁকির কথা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসসহ গার্লস হোস্টেল ও অ্যাকাডেমিক ভবনসহ আরও কয়েকটি ভবন এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ ৭ মাস আগে ফজলে রাব্বি হলকে বসবাসের অনুপযোগী এবং পরিত্যক্ত ঘোষণা করা সত্ত্বেও প্রত্যেক শিক্ষার্থী এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে বসবাস করছেন। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, রানা প্লাজা বা জগন্নাথ হলের ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না—যা হবে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য একটি লজ্জাজনক ঘটনা।