আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম শনিবার (২০ মে) বিকালে থাকবো সাল দুবুসি প্রেক্ষাগৃহে। এখানেও দুই স্তরের নিরাপত্তা। প্রেক্ষাগৃহে ঢুকে একেবারে সামনে থেকে এক সারি পরে আসন পেলাম। ঘড়ির কাঁটা পৌনে ৫টার (বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ৯টা) ঘরে যেতেই পিনপতন নিরবতা নেমে এলো এখানে। সবার চোখ পর্দায় নয়, বরং উল্টোদিকের দরজার দিকে! কারণ এই পথ দিয়ে আসবেন ছয় ফুট দীর্ঘ মানুষটি। রসিকতা করে এক কর্নারে কয়েকজন এমনি করতালি দিলো। কাছে-দূরে সবাই আরও মনোযোগী হয়ে উঠলো। কেউ আসছে না দেখে পড়লো হাসির রোল।
উৎসবের ধ্রুপদী ছবির বিভাগ কান ক্ল্যাসিকস-এ ট্রিবিউট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ক্লিন্ট ইস্টউডের ‘আনফরগিভেন’ (১৯৯২)। রজতজয়ন্তীতে এর প্রদর্শনী শুরুর আাগে তিনি মঞ্চে উঠতেই তার এক হাত উপরে তুলে দেখিয়ে থিয়েরি ফ্রেমো জানিয়ে দিলেন, ইস্টউডই আসল বিজয়ী।
২৫ বছর আগের ছবির প্রদর্শনীতে এসে ক্লিন্ট ইস্টউড জানালেন, ‘আনফরগিভেন’-এর মতো ওয়েস্টার্ন ধাঁচের ছবি বানানোর সম্ভাবনা আছে এখনও। বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখাতে চান তিনি!
ইস্টউড বলেন, ‘২৫ বছর আগে এ ছবির চিত্রনাট্য পড়ে মনে হয়েছিল, এটাই ওয়েস্টার্ন ধাঁচের শেষ কাজ করার জন্য যুতসই। এখন পর্যন্ত ওটাই শেষ, এরপর আর এ ধরনের কিছু পাইনি। কিন্তু কে জানে, ভবিষ্যতে হয়তো ওইরকম কিছু আসতেও পারে।’
এরপর সবার সঙ্গে বসে নিজের ছবি উপভোগ করেন এই কিংবদন্তি। ‘আনফরগিভেন’ অস্কারে সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালকসহ চারটি বিভাগে পুরস্কৃত হয়।
রবিবার (২১ মে) বিকাল ৪টায় উৎসবে ৭০তম মাস্টারক্লাস উদ্বোধন করবেন ক্লিন্ট ইস্টউড। কানে এর আগে ১৯৯৪ সালে প্রতিযোগিতা বিভাগের বিচারকদের সভাপতি ছিলেন তিনি।
এদিকে প্যারিসে ২০১৫ সালে ট্রেনে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে এগিয়ে আসা যাত্রীদের সত্যিকারের ঘটনা নিয়ে নতুন একটি ছবি পরিচালনা করতে যাচ্ছেন ক্লিন্ট ইস্টউড। এর চিত্রনাট্য তৈরি হবে মার্কিন লেখক অ্যান্থনি স্যাডলার, অ্যালেক স্কারলাটস ও স্পেন্সার স্টোনের গ্রন্থ অবলম্বনে। তারা সবাই বাল্যবন্ধু। বইটির নাম ‘দ্য ১৫:১৭ টু প্যারিস: দ্য ট্রু স্টোরি অব অ্যা টেরোরিস্ট, অ্যা ট্রেন, অ্যান্ড থ্রি আমেরিকান হিরোস’।
ক্লিন্ট ইস্টউড পরিচালিত সবশেষ ছবি ‘সালি’তে দেখানো হয়েছিল সব যাত্রীকে বাঁচাতে পুরো উড়োজাহাজকে নদীতে নামিয়ে আনা এক বৈমানিকের সত্যি জীবনের গল্প।
/জেএইচ/এমএম/