বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি কর্তৃক শাকিব খানসহ বেশ কয়েকজন তারকার বিরুদ্ধে নেওয়া নিষেধাজ্ঞার মতো বিতর্কিত পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন অভিনেতা বাপ্পারাজ। শিল্পীদের নিষিদ্ধ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সবাই এক ছাদের নিচে না এলে আর কখনও এফডিসিতে আসবেন না বলে অভিমানের সুরে জানিয়েছেন জনপ্রিয় এই তারকা।
শাকিবের ওপর বিভিন্ন অভিযোগ ও নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বাপ্পারাজের ভাষ্য, ‘আমার বাবার দাফন হয়ে যাওয়ার পর পেছনে তাকিয়ে দেখি শাকিব এবং জায়েদ (চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক) আছে। তাদের কাছে আমার প্রথম কথাই ছিল, তোমরা কোলাকুলি করো, কোনও বিভেদে জড়াবে না। আমার বাবা চলে গেছেন, আমি হাতজোড় করে বলি— তার সম্মানে হলেও আসুন নিষিদ্ধ খেলাটা বন্ধ করে দিই। রাজ্জাক সাহেব কখনও বিভেদ করেননি, বিভাজন করেননি, কাউকে বহিষ্কারও করেননি, নিষিদ্ধও করেননি। তার সম্মানে আমি দাবি নিয়ে বলবো, সব ভুলে গিয়ে আজ থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিন।’
একই প্রসঙ্গে বাপ্পারাজের মন্তব্য— ‘আজ সুচন্দা আন্টি সামনে আছেন, তিনি যদি শাকিবকে ফোন করে বলেন— তুমি এফডিসিতে পরিচালক সমিতিতে আসো, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলবো। শাকিব কখনও বলবে না সে আসবে না। ফারুক সাহেব, আলমগীর সাহেব, পারভেজ সাহেব (সোহেল রানা) যদি বলেন— শাকিব আসো, তোমার সঙ্গে কথা বলবো। শাকিব আসতে বাধ্য। এজন্য মামলা করার দরকার হয় না। বাড়িতে উকিল নোটিশ পাঠানোর দরকার হয় না। আমাদের নিজেদের সম্মান আমরা করি না। আমরা এটা ভুলে গেছি। আমরা নিজেদের অবস্থান বুঝতে পারছি না বলেই এ অবস্থা।’
শনিবারের শোকসভা আয়োজন করে ১৮টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার। এ প্রসঙ্গ টেনে বাপ্পারাজের কথা, ‘আমরা মুখে বলি পরিবার। কিন্তু সদস্যদের বহিষ্কার করে দিই। পরিবার কখনও তার সদস্যকে বহিষ্কার করে না, শাসন করে। আপনারা শাসন করবেন, একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবেন। আজ এটাই আমার দাবি। আমাদের মুরুব্বিরা এখনও আছেন। যারা আমাদের শাসন করতে পারেন, পথ দেখাতে পারেন। যারা বেঁচে আছেন, তাদেরকে সম্মান দেবেন। আমরা যারা ছোট আছি তারা অগ্রজদের সম্মান দেবেন। তাদের যে যোগ্যতা ও আসন, তা যেন আমরা দিতে পারি। সেই চেষ্টাই আমরা করবো।’
‘আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক বাইরের লোক ঢুকে গেছে, যারা আমাদের যুদ্ধে নামিয়ে দিয়ে তালি বাজিয়ে নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়। আমরা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আবারও ফেরত পেতে চাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি এখন ফিল্মের লোকের হাতে নেই, বাইরের লোকের হাতে। এখানে নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং হয়, কিন্তু আমরা ফিল্মের লোকেরা শুটিং করতে পারি না।’
বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অভিনয়ে নাম লেখান বাপ্পারাজ। ১৯৮৬ সালে রাজ্জাকের পরিচালনায় ‘চাঁপাডাঙার বউ’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় পথচলা শুরু করেন তিনি। তার অভিনীত ছবির তালিকায় উল্লেখযোগ্য— ‘গরিবের সংসার’, ‘প্রেমের সমাধি’, ‘পাগলীর প্রেম’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘প্রেমগীত’, ‘ভুলো না আমায়’, ‘মা যখন বিচারক’ প্রভৃতি।