জন্মদিনে স্মরণ

মলাট উল্টাতেই আমি ভিরমি খেলাম

হুমায়ূনননন জাহিদদদদস্যার আমার যতটা বড় ভাই তারও বেশি ছিলেন বন্ধুর মতো। ফলে শুধু জন্ম বা মৃত্যুদিন নয়, স্যারের সঙ্গে আমার বসবাস এখনও নিত্যদিনের। আমাদের কত আনন্দ আর বেদনার স্মৃতি।

মনে পড়ে, স্যারের কোনও বই বের হলেই তার অটোগ্রাফসহ একটা নতুন বই হাতে পাওয়ার অধীর অপেক্ষায় থাকতাম। শুধু আমি না, স্যারের প্রিয়ভাজন সবাই মনে মনে সেই প্রত্যাশাই করতেন। স্যার ডাকবেন, মজার একটা লাইন লিখে অটোগ্রাফ দিয়ে নতুন বই এগিয়ে দিবেন…। বরাবর তিনি তাই করতেন। আমিও সেই সৌভাগ্যবানদের একজন ছিলাম।

তো যথানিয়মে ‘হিমুর দ্বিতীয় প্রহর’ উপন্যাসটি প্রকাশ পেল। যথারীতি বইটি হাতে পাওয়ার অপেক্ষা করছিলাম। স্যার ডাকলেন কাছে, বইটি হাতে তুলে দিলেন। আমি মলাট উল্টে দেখতে চাইলাম এবার স্যার কী লিখে অটোগ্রাফ দিলেন। মলাট উল্টাতেই আমি ভিরমি খেলাম। যখন দেখলাম অটোগ্রাফের বদলে বইটি তিনি আমাকেই উৎসর্গ করলেন!

উৎসর্গপত্রে তিনি লিখেছেন-

জাহিদ হাসান, প্রিয় মানুষ

মানুষ হিসেবে সে আমাকে মুগ্ধ করেছে,

একদিন হয়তো অভিনয় দিয়েও মুগ্ধ করবে।

(দ্বিতীয় বাক্যটি দিয়ে তাকে রাগিয়ে দিলাম, হা হা হা)

উৎসর্গপত্রটি পড়ে আমি মনে হয় ঘামতে থাকলাম। না, রাগে নয়- স্যারের পক্ষ থেকে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত উপহার পেয়ে। মানুষ হিসেবে আমি স্যারকে মুগ্ধ করতে পেরেছি- এরচেয়ে বড় অর্জন আর কী হতে পারে? স্যার, আপনি সেই উৎসর্গে আমাকে রাগানোর জন্য লিখেছিলেন, একদিন হয়তো অভিনয় দিয়েও মুগ্ধ করবো আপনাকে।

জানি না স্যার, আপনাকে শেষ পর্যন্ত অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করতে পেরেছি কি না। তাই, আজও সেই চেষ্টাটাই করে যাচ্ছি।

শুভ জন্মদিন স্যার।

শুধু একটা বিনীত অনুরোধ করতে চাই, এই মানুষটাকে নিয়ে আমরা যেন কেউ কোনও বিব্রতকর বা বিভ্রান্তিকর কোনও কাজ না করি। প্লিজ।

অনুলিখন: মাহমুদ মানজুর