নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা সম্মেলনে তারানা হালিম

বক্তব্য রাখছেন তারানা হালিম (ছবি: সংগৃহীত)অভিনেত্রী হিসেবেই তারানা হালিম বেশি পরিচিত। রাজনীতিতে নাম লেখানোর পর তাকে আর অভিনয়ে পাওয়া যায়নি। তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর আবারও বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দেখা মিললো তার। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অংশ হিসেবে ‘চতুর্থ আন্তর্জাতিক উইমেন ফিল্মমেকারস কনফারেন্স’ উদ্বোধন করেন তিনি।

এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে সৃজনশীল কাজে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তথ্য প্রতিমন্ত্রী। তার কথায়, ‘এ ধরনের বিশেষ সম্মেলন সন্দেহাতীতভাবে নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।’
রাজনীতিসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ দেশের নারীরা প্রায় সবক্ষেত্রেই যোগ্যতার প্রমাণ রাখছে। তাই চলচ্চিত্রসহ পুরো মিডিয়া অঙ্গনে পুরুষ ও নারীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
রাজধানীর আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে অতিথিদের নিয়ে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করেন তারানা হালিম। অনুষ্ঠানে ছিলেন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সম্মেলনের প্রশিক্ষক মিসেস সিডনী লেভিন, উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ শেখ ইমতিয়াজ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরিন, অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত, বন্যা মির্জা প্রমুখ। দেশীয় চলচ্চিত্রে নারীদের দুই অগ্রদূত সুমিতা দেবী ও রওশন জামিলকে উৎসর্গ করা হয়েছে এবারের সম্মেলন।

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার অপর্ণা সেন। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) উৎসব উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।

দুই দিনের এই সম্মেলনে দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরা ছয়টি বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণকেন্দ্রিক আলোচনা করছেন। বিষয়গুলো হলো— চলচ্চিত্রে নারীর সমতা নিশ্চিতকরণ, এশিয়া অঞ্চলে প্রবীন নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা, ভারতীয় চলচ্চিত্র নারীর বৈষম্য হ্রাসে বাংলা চলচ্চিত্রের ভূমিকা, ভারতীয় চলচ্চিত্রে নবদিগন্তের সূচনা নিয়ে সমালোচনামূলক নারীবাদী আলোচনা, চলচ্চিত্রাঙ্গনে অগ্রদূত হিসেবে নারী, চলচ্চিত্রে দক্ষিণ এশীয় নারী ও পশ্চিমা নারীর তুলনামূলক বিশ্লেষণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন ও জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগিতায় আয়োজিত এই সম্মেলনে ৩৫ জনেরও বেশি নারী ও নারীবাদী চলচ্চিত্র নির্মাতা অংশ নিচ্ছেন।

১৯৯২ সাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করছে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। বিশ্বব্যাপী নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে উৎসবের অংশ হিসেবে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।